সব বাধা অতিক্রম করে সুদূর ব্রাজিল থেকে প্রেমের টানে কুমিল্লার লাকসামে ছুটে এসেছেন ২৫ বছর বয়সী জুলিয়ানা নামে এক তরুণী।
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় কাকরাইল একটি কাজি অফিসে ওই প্রেমিক যুগল বিয়ে করেন।
প্রেমিক বাহরাইন প্রবাসী আবদুর রব হিরু উপজেলার গোবিন্দপুর ইউপির দোখাইয়া গ্রামের আবুল খায়েরের ছোট ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে শেষবর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমান প্রবাসে। বছরখানেক আগে দেশে আসেন হিরু।
হিরু বলেন, ৬ জুলাই ২০১২ সালে বাহরাইন কর্মস্থলে অবসরে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা সেন্টারে দুজনার পরিচয় হয়। পরে ফেসবুকে জুলিয়ানার আইডিতে লাইক দেন হিরু। জুলিয়ানও তাকে লাইক দেন। এভাবেই শুরু হয়ে চলতে থাকে তাদের প্রেম আলাপ-আলোচনা।
একপর্যায়ে তাদের টেক্স বিনিময় থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিদিনই কথা হতো। সেই থেকে দুজনের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে ব্রাজিলের প্রেমিকা জুলিয়ানার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিয়ের সম্পর্কের কথাবার্তা শুরু করে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়।
ব্রাজিলের প্রেমিকা জুলিয়ানা বাবা মারকোর্স জিয়ানিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন। গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে আসেন ওই প্রেমিকা ও তার বাবা।
ঢাকায় এয়ারপোর্টে বাংলাদেশের হিরু বাবা মেয়েকে রিসিভ করে কাকরাইল কাজি অফিসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করি। এরপর মিরপুর-২ একটি ভাড়া বাসায় ওঠি।
গত মঙ্গলবারে প্রেমিকা জুলিয়ানা ও তার বাবাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে আসি। সবার আশীর্বাদে ও আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা সুখের সংসার করছি। জুলিয়ানা কিছু বাংলা বলতে শিখেছে। আমাদের পরিবারের সব সদস্য এই সম্পর্ক নিয়ে খুবই খুশি।
এ গভীর প্রেমের খবরে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুসহ লোকজন প্রেমিক আব্দুর রব হিরুর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। গত ১ নভেম্বর হিরুর বাবা আবদুল খালেক এ দৃশ্য দেখে স্থানীয়দের নিয়ে বধূবরণ উপলক্ষে ৩০০ লোকের মেজবানের আয়োজন করেন।
স্থানীয় এক রিকশাচালক ওই নবদম্পতিকে নিয়ে আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখান। এরপর জুলিয়ার বাবা রিকশা চালিয়ে মেয়ে এবং জামাইকে নিয়ে আনন্দ-উল্লাস করেন। বর্তমানে নবদম্পতি তাদের ভাড়া করা ঢাকার বাসায় অবস্থান করছেন।