Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লাল-বেগুনী আলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও খদ্দের পাচ্ছে না পতিতারা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০২:০২ PM
আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:০৩ PM

bdmorning Image Preview


দিন দিন ভেঙে পড়ছে গ্রিসের অর্থনীতি। ক্রমেই বেড়ে চলছে বেকারত্বের হার। বলতে গেলে দেশটার আর্থ-সামাজিক অবস্থা একেবারে করুণ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। আর এই অবস্থার জলজ্যান্ত প্রমাণ মেলে সেদেশের পতিতাদের অবস্থা থেকে। মন্দার কবল থেকে গ্রিসের পতিতালয় বাদ যায়নি। ২০০৮ সাল থেকে গ্রিসে যে অর্থ সংকট শুরু হয় তা হাজার হাজার নারীকে পতিতা বৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণে বাধ্য করলেও এখন তারাও নিদারুণ অভাবে রয়েছেন। তাদের বাজার দরও পড়ে গেছে। লাল কিংবা বেগুনী আলোতে খদ্দেরের অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা পতিতারা বসে থাকে কিন্তু খদ্দের মিলছে না। নিউ ইয়র্ক টাইমস

১৮ বছর ধরে ফুলের ব্যবসা ছিল যার সেই মিসেস দিমিত্রা এখন নাম লিখিয়েছেন পতিতালয়ে। প্রায় অনাহারে কাটছে দিন। খদ্দের নেই। গ্রিসে পতিতাবৃত্তি বৈধ। তবে রাস্তায় পতিতাবৃত্তি অবৈধ। তারপরও কোনো রাস্তার মোড়ে পেটের দায় ও অভাবের তাড়নায় মেয়েরা নেমে পড়ে। এথেন্সের প্যান্টিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রিগরিস ল্যাজোস বলেন, অর্থনীতি এক বেদনাদায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পতিতাবৃত্তি ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও এ খাতে আয় কমেছে ৫৬ শতাংশ। ২০১২ সালে একজন পতিতা কোনো খদ্দেরের কাছ থেকে কমপক্ষে ৩৯ ইউরো পেলেও এখন তা নেমেছে ১৭ ইউরোয়।

গ্রিসের আইনে স্কুল, হাসপাতাল, চার্চ, নার্সারি, জনসমাগম বহুল স্থান থেকে ৬৫৫ ফুট দূরে পতিতালয় থাকার কথা থাকলেও এথেন্সে ৭৯৮টি পতিতালয়ের মধ্যে বৈধ মাত্র ৮টি। পুলিশ কর্মকর্তা থিওডোরোস ক্রোনোপোলাস বলেন, ৩ শতাধিক পতিতালয় রয়েছে এথেন্সে। তাদের হিসেবে অবৈধ পতিতালয় হিসেবে ধরা হয়নি। আলবানিয়ার পতিতা মনিকা জানান, গত ৭ বছর ধরে তারা নিদারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আরেকজন এলেনা বলেন, আমার প্রয়োজন টাকা, যৌনতাকে আমি ঘৃণা করি। ১৪ বছর বয়স থেকে আনাস্তাশিয়ায় এ পেশায় থাকলেও এখন বলছেন, এত প্রকট সংকট কখনো দেখেননি। ১০ ইউরোর জন্যে খদ্দেরের কাছে যেতে বাধ্য হচ্ছি।

গ্রিস এইচআইভি অফিস বলছে এ রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা এখন ৬২৮ জন। ৬ বছর আগে এর অর্ধেক ছিল। মনিকা বলেন, ২০ থেকে ৫০ ইউরো ১০ মিনিটে আয় করা কোনো কঠিন কাজ ছিল না। এমনকি ১’শ ইউরো। বছর কয়েক আগে খদ্দের পছন্দ করলে টিপস মিলত। এখন টিপসের প্রশ্নই ওঠে না। মাসে ৮ থেকে ৯’শ ইউরো কামাই কোনো ব্যাপার ছিল না। এখন তা কল্পনা। দিন রাত পতিতাদের ঘরের দরজা খোলা কিন্তু খদ্দের খুব কমই প্রবেশ করে সেখানে।

৩৩ বছরের খদ্দের ও ট্যাক্সি ড্রাইভার ম্যানোলিস বলেন, এ এমন এক অভ্যেস যা মানুষ কখনো ছাড়তে পারে না। ধূমপানের মত। মাত্র ২০ ইউরো খরচ করলেই ঝাঁকে ঝাঁক আপনার জন্যে অপেক্ষারতরা তৈরি। কুড়ি বছর ধরে পতিতাদের মাসি ভাসো এ পেশার অভিজ্ঞতায় বলেন, ৮ বছর আগে একজন পতিতা দিনে ২০ থেকে ৩০ জন খদ্দের পেত। এখন ৫ জন পেলে সৌভাগ্য বলে মনে হয়। তারা এখন দেখতে আসে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরখ করে চলে যায়।

Bootstrap Image Preview