বিকল্পধারার সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দিয়েছেন খালেদা জিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। তিন বছর আগে রাজনীতি থেকে অবসরে গিয়েছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী। কিন্তু হঠাৎ করেই তার এই ঘোষণায় মানুষ বেশ অবাক হয়েছিল।
শুক্রবার বিকেলে (২৬ অক্টোবর) বিকল্পধারারা সভাপতির হাতে ফুল দিয়ে দলে যোগ দিয়েছেন। ওই ঘটনার তিন বছর নতুন করে আরেকটি চমক দেখালেন তিনি।
এ ব্যাপারে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল এবং গত কিছুদিন ধরে কথাবার্তা চলছিল। উনার অনেক কিছুর সঙ্গে, নীতির সঙ্গে, আদর্শের সঙ্গে, কথাবার্তার সঙ্গে আমার মিলে যায়। তো মতের মিল থাকাতে, মনে হলো একটা চেষ্টা করে দেখি। সেই কথা ভেবেই আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দিয়েছি।
এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে শমসের মোবিন বলেন, এটা নিতান্তই আমার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই আমি এই পদক্ষেপ নিয়েছি।
বিএনপি ছাড়ার ব্যাপারে শমসের মবিন বলেন, দলটির সঙ্গে কিছুটা মতবিরোধ ছিল। যেমন নাশকতার রাজনীতিতে আমি মোটেও বিশ্বাস করি না। সেটা সবধরনের নাশকতা। পেট্রলবোমা দিয়ে পুড়িয়ে মারা হোক, বা লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মারা হোক। আর একটি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রশ্নে। আমি আশা করেছিলাম যে, বর্তমান বাংলাদেশের কথা চিন্তা করে বিএনপি তার কাজেকর্মে এবং তার অবস্থানে আরেকটু অসাম্প্রদায়িকতার দিকে চলে আসবে। সেসব বিষয়ে আমি বাধা পাচ্ছিলাম। আমার মনের মতো হচ্ছিল না।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে লেখা এক চিঠির মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। চিঠিটি তিনি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দেন।
এর পরদিন অবসরে যাওয়ার বিষয়টি তিনি গণমাধ্যমকে জানান। ওই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘আমি যুদ্ধাহত একজন মুক্তিযোদ্ধা। শারীরিকভাবে এখন আর রাজনীতি করার মতো অবস্থায় নেই। এ কারণে বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকেই তা কার্যকর হবে।’
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে শমসের মবিন চৌধুরীকে পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করে পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান। ২০০৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০৯ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় লেফটেন্যান্ট ছিলেন তিনি। যুদ্ধে ভূমিকা রাখায় তাঁকে বীর বিক্রম উপাধি দেওয়া হয়। যুদ্ধাহত হওয়ায় পরবর্তীতে তাঁর চাকরি পররাষ্ট্র দপ্তরে ন্যস্ত হয়।