Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩৮ PM
আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩৮ PM

bdmorning Image Preview
পিএইচএ ভবন


ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরসহ নারী শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাভারের এই ভবনটিতে হামলা চালানো হয়েছে।

শুক্রবার সকালে সাভারের নবীনগরের মির্জানগর এলাকায় অবস্থিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে পুলিশ জানায়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে অনেকেরই জমি রয়েছে। জমির মালিকানা নিয়ে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান।   

গণস্বাস্থ্য পিএইচএ ভবনের পরিচালক অনিল কুমার ভৌমিক অভিযোগ করেন, সকালে মির্জানগর এলাকায় ১৫ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত পিএইচএ ভবনের মালিকানা দাবি করে কটন টেক্সটাইল ক্রাফটস লিমিটেড নামের ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় একদল বহিরাগত। এ সময় তারা পিএচপি ভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

এছাড়াও সন্ত্রাসীরা ভবনের ভেতরে হোস্টেলে থাকা নারী শিক্ষার্থীদেরও মারধর করে। ভবন প্রাঙ্গণের অনেক গাছপালা কেটে ফেলে। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে তাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করতে গেলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি পুলিশ।

এছাড়াও পিএইচএ ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দিন ও আবু বক্কর নামে দুই ব্যক্তির মালিকানার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সেখানে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। এর পাশেই বেশ কিছু গাছ কেটে সেখানে প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। একই সঙ্গে পিএইচএ ভবন এলাকার এক পাশে আমিনুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যক্তি জমির মালিকানার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। ভবন এলাকায় নাছির উদ্দিন, আবু বক্কর, আমিনুল ইসলামসহ সাইনবোর্ড টাঙানো অন্যান্য জমির মালিকানা দাবীদারদের পক্ষে অবস্থান করা ৪০-৫০ জন বহিরাগতকে ঘুরোঘুরি করতে দেখা যায়। তবে তারা কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি।

এদিকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের আহত শিক্ষার্থী লিমন (২০১১ সালে র‌্যাবের গুলিতে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন তিনি) জানান, সকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বহিরাগত লোকজনের ভিড় দেখে সেখানে গিয়ে সহপাঠীদের লাঞ্ছিত হতে দেখেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে ডান হাত ভেঙে ফেলে হামলাকারীরা। এ সময় তার সহপাঠীদেরও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করে।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীরমতুর্জা আলী বাবু জানান, যারা এখন জমির মালিকানা দাবি করে মামলা করছেন কিংবা দখলের চেষ্টা করছেন, তাদের এসব জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কয়েকটি মামলায় আদালত গণস্বাস্থ্যের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। এখনও অনেক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, কয়েক বছর ধরে ডা. জাফুরুল্লাহ চৌধুরী আমার ১৩ শতাংশ জমি দখল করে রেখেছেন। জোর পূর্বক আমার জমিতে পিএইচএ ভবনের প্রধান ফটক নির্মাণ করেছেন। গাছপালা কেটে ফেলেছেন। জমিতে গেলে নানা রকম হুমকি দেন। ডা. জাফুরুল্লাহ চৌধুরীর ভয়ে কেউ তার বিপক্ষে কথা বলার সাহস পেতেন না। কিন্ত এখন অনেকেই যার যার দখল বুঝে নিচ্ছেন। তাই আমিও আমার জমি দখলমুক্ত করে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছি।    

আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ জানান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলার ঘটানায় কোন অভিযোগ পাননি তারা। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

Bootstrap Image Preview