Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেরিতে বিয়ে হলে যেসব সমস্যায় ভুগেন নারীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৩১ PM
আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


একজন নারীর শেষ গন্তব্য ও সাফল্য বিবেচনা করা হয় বিয়ে ও সংসারের মাপ কাঠিতে। আর তাই, একটি নির্দিষ্ট বয়সের মাঝে বিয়ে না হলে বেশিরভাগ নারীই কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। কখনো কাজ করে ঈর্ষা, কখনো সামাজিক চাপ, কখনো একাকীত্ব। সব মিলিয়ে অনেকেই নিজের মাঝে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

আসুন জেনে নিই, দেরিতে নারীদের বিবাহ হলে এমন কিছু সমস্যা। সমস্যা গুলো চিহ্নিত করা গেলে সেটা থেকে বের হয়ে আসাও সহজ।

একাকীত্ব থেকে বিষণ্ণ হয়ে যাওয়া

সমবয়সী সকল বোন বা বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে গেছে, আর স্বভাবতই বিয়ের পর সকলেই নিজের পৃথিবী নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এক্ষেত্রে যার বিয়ে হয়নি, তিনি হয়ে পড়েন একা। প্রিয় বোন বা বান্ধবীদের খুব একটা কাছে পান না, কাটানো হয় না ভালো সময়। সবমিলিয়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়েন, আর সেই বিষণ্ণতা থেকেই মনের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা ও শুন্যতা। আর এই বোধ থেকে বের হয়ে আসার সেরা উপায় হচ্ছে নতুন বন্ধু বান্ধব তৈরি করা, যার কাছে আপনার জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে।

খুব কাছের বোন বা বান্ধবীর প্রতিও ঈর্ষা হওয়া

এটাও খুব সাধারণ একটা আবেগ। আমরা মানুষ, এমনটা হতেই পারে আমাদের সাথে। খুব কাছের বোন বা বান্ধবীটি হয়তো এখন আর আপনাকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না, নিজের সংসার নিয়েই ব্যস্ত ও সুখী। এমন অবস্থায় ঈর্ষার একটা বোধ খোঁচা দিতেই পারে আপনাকে। এক্ষেত্রে নিজেকে বিষয়টা বোঝান। প্রথমত এটা ভাবুন যে তার জীবনে মোটেও আপনার গুরুত্ব কমেনি। আর দ্বিতীয়ত, একদিন আপনারও এমন চমৎকার একজন জীবনসঙ্গী হবে,তাই মন খারাপের কিছুই নেই।

বিয়ে করার জন্য তাড়াহুড়া করতে গিয়ে নিজেকে হাস্যকর করে ফেলা

অনেক নারীই এই কাজটি করে ফেলেন নিজের অজান্তেই। আর তা হলো একটি বিয়ে করার জন্য 'ডেস্পারেট' হয়ে যান। ক্রমাগত সামাজিক ও পারিবারিক চাপ থেকে এটা হয়। মনের মাঝে ক্রমাগত ঘুরতে থাকে যে "বয়স পার হয়ে যাচ্ছে'! আর এই পার হয়ে যাওয়া বয়সকে টেক্কা দিতে একজন জীবনসঙ্গীর জন্য ব্যাগ্র হয়ে ওঠেন অনেকেই। বারবার ঘটকের কাছে যাওয়া, অফিসে বা পরিচিত মহলে নিজেকে পাত্রী হিসাবে উপস্থাপন ইত্যাদি করতে গিয়ে নিজেকে হাসি ও করুণার পাত্রে পরিণত করে ফেলেন তাঁরা।

আপনিও কি এমন করছেন? তাহলে জেনে রাখুন, এসব করে কেবল সামাজিক মর্যাদাতেই খাটো হচ্ছেন আপনি। লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না।

নিজেকে অযোগ্য মনে করা

সমবয়সী সকলে নিজের জীবন সঙ্গী পেয়ে গেছে, আপনি হয়তো বারবার চেষ্টা করেও পারছেন না। হয়তো প্রেম সফল হয়নি, কিংবা পরিবার থেকে চেষ্টা করেও ফল হচ্ছে না। বিশেষ করে আমাদের দেশে পাত্রী দেখাবার প্রক্রিয়াটা খুব অপমানজনক। এবং এক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত হবার পর নিজেকে অনেকেই অযোগ্য মনে করতে শুরু করেন। এত অযোগ্য যে কোনো ছেলেরই তাকে পছন্দ হচ্ছে না। এমনটা ভাবা মানে অকারণেই নিজেকে ছোট করা।

মনে রাখবেন, কোনো পুরুষের আপনাকে পছন্দ হয়নি মানেই আপনি অযোগ্য নন। এটা নিয়ে কষ্ট পাবার কিছু নেই। সম্ভব হলে ঘটা করে পাত্রী দেখার আয়োজনটা এড়িয়ে যান, অনেকটাই স্বস্তি পাবেন।

চাপের মুখে ভুল মানুষকে বেছে নেয়া

ক্রমাগত পারিবারিক ও সামাজিক চাপের কারণে অনেক নারীই ভুল মানুষটিকে বেছে নেন বিয়ের জন্য। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে যাকে সামনে পেলাম, তাকেই বিয়ে করে ফেললাম। কিংবা যে রাজি হলো, তাকে পছন্দ না হলেও বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া। অনেকেই এই ব্যাপারটিকে ভালোবাসা ভেবে নিজেকে শান্তনাও দিতে চান। আবার অনেকে পরিবারকে খুশি করার জন্য নিজেকে রীতিমত চাপ দিয়ে বিয়েতে রাজি করার। এই ভুলটি কখনো করবেন না। একটাই জীবন এবং এই জীবনে একটি ভুল বিয়ে আপনার অশান্তি বাড়াবে বৈ কমাবে না।

কারো ভালো সহ্য করতে না পারা

এটাও একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকের মাঝেই দেখা যায়। যখন বিয়ে না হবার কারণে একজন মানুষ ক্রমাগত হয়রানিয় শিকার হতে থাকেন, তখন স্বভাবতই তার মাঝে জন্ম নেয় ক্ষোভ ও ক্রোধ। আর এই ক্ষোভ ও ক্রোধের কারণেই বিবাহিত সকলকে মনে হতে থাকে শত্রু। নিজের অজান্তেই একজন খিটখিটে মানুষে পরিণত হয়ে যাই আমরা, যার কাছে পৃথিবীর কারো ভালোটা ভালো লাগে না। কারো সাফল্য বা সুখ সহ্য হয় না। এই ব্যাপারটা দূর করার জন্য কাউন্সিলিং ভালো কাজ দিতে পারে।

আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা

এটাই কি স্বাভাবিক না? যে সমাজে একজন মেয়ের সফলতা বা বিফলতা নির্ভর করে তার স্বামী ও সংসারের স্ট্যাটাসের ওপরে এবং সঠিক সময়ে বিয়ে না হলে মেয়েটি হয়ে ওঠে সকলের চক্ষুশূল, সেই সমাজে বিয়েতে দেরি হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। যখন ক্রমাগত নিজের কাছের মানুষেরাই বলতে থাকে যে "তুমি এত অযোগ্য যে পাত্র জোটে না", তখন অনেক নারীই নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন আর ক্রমশ গুটিয়ে নিতে থাকেন জীবন থেকে। ভুলেও এই কাজটি করবেন না। জীবন আপনার। আর আপনার জীবনে মাথা উঁচু করে আপনাকেই বাঁচতে হবে। একবার ঘাড় নুইয়ে ফেললেই পরাজিত আপনি।

ভালো থাকুন নারীরা। নিজেকে বিয়ের বা সংসারের মাপকাঠিতে মাপবেন না। আপনি মানুষ, নিজেকে মাপুন কেবল নিজের যোগ্যতার মাপকাঠিতে।

Bootstrap Image Preview