Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ, আ.লীগের দখলে রাজপথ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৫৫ PM
আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


সিলেটে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিলেটে এ সমাবেশ থেকে কোন কর্মসূচি ঘোষণা করেন কিংবা কী বার্তা দেন- সেদিকেই সবার আগ্রহ। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিলেটের রাজপথ দখল করেছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। তারা বিগত পাঁচ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারপত্র জনসাধারণের কাছে বিলি করেছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।

বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে সিলেটের ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্ট থেকে প্রচারপত্র বিলি শুরু হয়। বিগত পাঁচ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারপত্র জনসাধারণের কাছে বিলি করেছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।

এ সময় নেতৃবৃন্দ গত পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরেন এবং আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থসহ সিলেট আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের জেলা, মহানগর, উপজেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।

এদিকে সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে বুধবার বেলা ২টায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে যোগ দিতে মঙ্গলবার সিলেটে এসে পৌঁছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব মোস্তফা আমিন।

আগে থেকেই সিলেটে অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, তাহসিনা রুশদী লুনা।

বুধবার ভোর ৬টার ফ্লাইটে সিলেটে পৌঁছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

পরে সকাল সাড়ে ৬টায় হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন তারা। এ সময় তাদের সঙ্গে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ জোটের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এত সব হেভিওয়েট নেতার অংশগ্রহণে সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ থেকে কী বার্তা আসে, তা নিয়ে রাজনীতি সচেতন মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

আরেকটি জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্টের এই প্রথম সমাবেশ রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। সে জন্য এই সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি কী আলটিমেটাম দেয়া হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখছেন সবাই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন- বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও সজাগ দৃষ্টি রাখছে।

রাজনীতির মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই প্রথম কর্মসূচি দেখেই নিজেদের আগামী করণীয় ঠিক করবে আওয়ামী লীগ- এমনটিই মনে করছেন তারা।

তাদের মতে, ঐক্যফ্রন্ট নেতারা যেসব দাবি তুলবেন কিংবা যে আলটিমেটাম দেবেন, তার জবাবের জন্যও সমাবেশে দৃষ্টি রাখবেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

বিশ্লেষকদের অভিমত, সাধারণ মানুষও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই সমাবেশের দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষ ইতিবাচক রাজনীতিই দেখতে চায়। নির্বাচন নিয়েও সাধারণ মানুষের আগ্রহ রয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কী ঘোষণা দেয়, তাদের নির্বাচনী রোডম্যাপ কী হবে- তা জানতে চান সাধারণ মানুষ।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সমাবেশ থেকে নিজেদের সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসতে পারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছ থেকে।

বর্তমান সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবিতে সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আলটিমেটাম দিতে পারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই আলটিমেটামে সরকার সাড়া না দিলে কোন পথে ঐক্যফ্রন্ট হাঁটবে, সে বিষয়েও ঘোষণা আসতে পারে।

তবে ধ্বংসাত্মক কিংবা জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতির কোনো কর্মসূচি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইতিবাচক রাজনীতি দিয়ে, পরিবর্তনের সুর তুলে সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে চায় ঐক্যফ্রন্ট।

Bootstrap Image Preview