Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

চুরি হয় না যে গ্রামে!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৪৫ PM
আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


মানিব্যাগ ভর্তি টাকা আর একটি রঙিন বাজারের ব্যাগ সবজি বিক্রেতার জন্য বাড়ির গেটের সামনে রেখে যাওয়ার কথা আপনি কখন চিন্তাও করবেন না। কিন্তু এর ব্যতিক্রম দেখা যায় এবেন্থাল গ্রামে। এখানকার মানুষ তাদের অর্থ সিন্দুকে ভরে রাখে না বা অন্যের ভয়ে মাটির নিচে পুঁতেও রাখে না।

এবেন্থাল। পশ্চিম রোমানিয়ার একটি শান্ত, নিবিড় ও মনোরম পরিবেশের বানাটুলুই পর্বতঘেঁষা গ্রাম। চারদিকে পাহাড় আর পাহাড়। সবুজ পাহাড়ের কোলঘেঁষে সরু রাস্তার দু ধারে বসতি।

এই গ্রামে প্রায় ৩০০ লোকের বাস। গ্রামে মানুষ কম থাকার কারণ, যারা একটু শিক্ষিত বা অর্থের দিকে ছুটতে পছন্দ করে, তারা শহরে চলে যান। আর যারা থাকে তারা গ্রামটির মায়ায় পড়ে থাকে। এখানে অধিকাংশই বয়োজ্যেষ্ঠ। পেশায় এরা কাঠুরে। কেউ আবার পশু পালন ও কৃষি কাজ করে। জাতিগত দিক থেকে তারা চেক।

অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি যুদ্ধের সময় মূলত এদের আবির্ভাব। ওই সময় কোনো কাজ না থাকায় বনে কাঠ কাটার কাজ বেছে নেন। ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী এই মানুষগুলো অনেক সৎ। গত ২০ বছরের বেশি সময় জুড়ে এই গ্রামে কোনো চুরি বা বড় ধরনের কলহ হয়নি। সহজ সরল প্রকৃতির মানুষগুলো নিজ কর্ম ও ধর্ম নিয়ে দলবদ্ধ ভাবে বাস করছে দুই শতাব্দীর বেশি।

এই গ্রামটি অনাধুনিক হলেও এবং অস্বচ্ছলতা থাকলেও এদের কোনো কিছুর জন্য চুরির মনোভাব নিতে হয় না। যদি কিছুর প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা একে অপরের কাছে চেয়ে নেন।

গ্রামের মানুষ যথেষ্ট শিষ্টাচার সম্পন্ন। তারা কেউ কারও বাড়ির সীমানায় অনুমতি ছাড়া কখনই প্রবেশ করে না। এদের পছন্দের খাবার পাউরুটি। প্রতি দুই দিন পর পর পাউরুটির গাড়ি আসে। শহর থেকে অনেক দূরে গ্রামটি বলে প্রতিদিন গাড়ি আসতে পারে না।

রোমানিয়া শহর থেকে অন্য একটি গ্রাম হয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূর থেকে রুটির গাড়িটি আসে। গ্রামের মানুষ যখন কাজে চলে যায়, তখন তাদের মানিব্যাগে নির্ধারিত টাকা রেখে যান।কেউ আবার বড় নোট রেখে যায় আর একটি চিরকুটে কতোগুলো পাউরুটি প্রয়োজন তা উল্লেখ করে রঙিন ব্যাগে বাড়ির দরজায় কখনও আবার বাড়ির সামনে গেটে ঝুলিয়ে রেখে যান।

রুটির গাড়ি সময় মতো এসে প্রত্যেক বাড়ির সামনে ঝুলানো ব্যাগ থেকে চিরকুট পরে যে কয়টা রুটির দরকার হয় তা রেখে যান।

অনেক সময় টাকার বড় নোট থাকলে তা ভাঙ্গিয়ে ঠিক পরিমাণ টাকার হিসাব করে রেখে যান। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যার দ্বারা গ্রামবাসীর মাঝে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। গ্রামটিতে কোনো পুলিশের প্রয়োজন হয় না এমনকি এখানে কোনো পুলিশ ষ্টেশন নেই যে বিষয়টি আপনাদের কাছে খুব দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। অনেক সময় অন্য শহর থেকে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসেন এবং তাদের সরলতা দেখে সবাই মুগ্ধ হন।

Bootstrap Image Preview