আগামী ২০ অক্টোবর রাজশাহীর পদ্মা গার্ডেনের মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে গান গাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর। মাইকে ব্যাপক প্রচার চলছে সে উপলক্ষে।
এমনকি বৃহস্পতিবার সকালেও মাইকে প্রচার করা হয়েছে, পদ্মাপাড়ে দর্শক মাতাতে আসছেন আইয়ুব বাচ্চু।
অথচ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় মগবাজারের নিজ বাসায় তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।
তাকে দ্রুত রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সকাল ৯টার সময় তিনি মারা যান বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান তারকারা। শত শত লোকের ভিড় জমেছে তাকে শেষবারের দেখবেন বলে।
বাচ্চুকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে হাজির হন নাসির উদ্দিন ইউসূফ বাচ্চু, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, মানাম আহমদে, কুমার বিশ্বজিৎ, হানিফ সংকেত, ফেরদৌস, রবি চৌধুরী, ফকির আলমগীর, প্রিন্স মাহমুদ, ঐশী, এলিটা, হানিফ সংকেতসহ আরও অনেকেই। ছিলেন বাচ্চুর দীর্ঘদিনের বন্ধু এন্ড্রু কিশোরও।
হাসপাতালে প্রিয় সহকর্মী, প্রিয় গায়ক আইয়ু্ব বাচ্চুকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পরেন আরেক কিংবদন্তি গায়ক কুমার বিশ্বজিৎ ও গীতিকার সুরকার এবং সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ।
চোখ মুছতে মুছতে এন্ড্রু কিশোর বলেন, ‘আমি একদম হতবাক হয়ে গেলাম সকাল বেলায় খবরটি শুনে। দুইদিন আগেও সে শো করে এসেছে। ভাবছিলাম গুজব। মন মানতে চায় না বাচ্চু নেই। আমারা যখন আজকের মতো এতো পরিচিত হয়ে উঠিনি তখন থেকেই আমরা বন্ধু। আমাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল। আমি, আইয়ুব বাচ্চু, কুমার বিশ্বজিৎ, হানিফ সংকেত একসঙ্গে আড্ডা দিতাম।’
তিনি আরও বলেন, সেসব দিনগুলো অনেক মধুর ছিল। একজন অসাধারণ শিল্পী ছিলেন বাচ্চু। তার মতো গিটার প্রেমিক আমি কখনই দেখিনি। হাতে টাকা থাকলেই গিটার কিনত। যারা গিটারিস্ট হতে চায়, শিল্পী হতে চায়। তাদের উচিৎ বাচ্চুকে অনুসরণ করা।
কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘ব্যান্ড সংগীতে বাচ্চু ভাইয়ের শূণ্যতা কখনোই পূরণ হবে না। তিনি আমাদের মাঝে চিরদিন বেঁচে থাকবেন কর্মের মাধ্যমে’।
ফিডব্যাক ব্যান্ডের ফুয়াদ নাসের বাবু বলেন, ‘আমি বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বাচ্চু ভাই নেই এটা বিশ্বাস করতে পারছি না’।
প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘বলার কোনো ভাষা নেই। বাচ্চু ভাই চলে গেছেন বিশ্বাস করতে পারছি না’।
বাংলার এ কিংবদন্তী শিল্পীর অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তার ভক্ত-শ্রোতারা শোক প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।