Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

পৃথিবীকে বাঁচাতে জাতিসংঘের নতুন সতর্কবার্তা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ১২:২৮ PM
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:২৭ PM

bdmorning Image Preview


বিশ্বে উষ্ণায়ন যে গতিতে বাড়ছে তাতে বিপর্যয় এড়াতে আর বেশি সময় বাকি নেই মানুষের হাতে। কাজেই পৃথীবিকে বাঁচাতে বিশ্ববাসীকে নতুন করে সতর্কবার্তা দিয়ে জাতিসংঘ বলছে- এ জন্য সমাজের ভেতরে বড় ধরনের রূপান্তর ঘটাতে হবে।

সোমবার (৮ অক্টোবর) জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেলের (আইপিসিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিশ্বের উপরিভাগের উষ্ণায়ন এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। সাগরের স্তুর বেড়ে যাওয়া ও প্রাণঘাতী ঝড়, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ডেকে আনার জন্য এর বেশি কিছু দরকার পড়ে না।

বলা হয়েছে, বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা দরকার। কিন্তু তা এখন বাড়তে বাড়তে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের পথে যাচ্ছে।

গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন সাম্প্রতিক সময়ে যে মাত্রায় পৌঁছেছে তাতে ২০৩০ সালের শুরুতে কিংবা মধ্য শতাব্দীর মধ্যেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে।

আইপিসিসির সদস্যরা গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার ইচানে বৈঠক করে জলবায়ু নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। নবৈঠকে ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সই করা দেশগুলোর সরকারকে প্রতিশ্রুতি পালনে অনুরোধ করার প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়। প্রতিবেদনে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের কৌশল গ্রহণে সরকারকে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৮৮ দেশের ঐকমত্যে ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এমন পর্যায়ে বেঁধে রাখার উদ্যোগে নেয়া হবে, যাতে তা প্রাক-শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না হয়।

ওই চুক্তিতে শিল্পোন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কোনো দেশই নিজেদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ নেয়নি।

এদিকে অন্যায্য চুক্তি বর্ণনা করে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে শিল্প বিপ্লব শুরু হওয়ার পর এরই মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের কারণে মূলত বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে হলে ভূমি ও জ্বালানির ব্যবহার, শিল্প, আবাসন, পরিবহন ও নগরায়ণে দ্রুত, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনতে হবে।

সেই সঙ্গে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ যে মাত্রায় কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের পর তা আরও কমাতে না পারলে চুক্তির লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে না।

আইপিসিসির যৌথপ্রধান জিম স্কেয়া বলেন, রসায়ন ও পদার্থের নিয়মকানুন অনুযায়ী বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে এ কাজ করতে হলে অভূতপূর্ব পরিবর্তন প্রয়োজন।

১ দশমিক ৫ ডিগ্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ৭০ থেকে ৮৫ শতাংশ সরবরাহ বিদ্যুৎ থেকে আসতে হবে, বর্তমানে যা মাত্র ২৫ শতাংশ।

এ ছাড়া গ্যাসভিক্তিক শিল্প-কারখানা থেকে কার্বন নিঃসরণ ৮ শতাংশে এবং কয়লাভিত্তিক শিল্প-কারখানার কার্বন নিঃসরণ শূন্য থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।

Bootstrap Image Preview