ময়মনসিংহের চেচুয়া বিলের পানি আর মাটি সর্বরোগের ওষুধ হিসেবে ফেসবুকে পরিচিতি পেয়েছে। একারণে চেচুয়া বিলে উৎসুক মানুষের ঢল থেমে নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিতে ছড়ানো গুজবে হাজারো মানুষের তথাকথিত তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে ময়মনসিংহের চেচুয়া বিল।
গুজব ছড়ানো হয়েছে, হাজারো মুশকিলের একমাত্র আছান এই চেচুয়া বিল। বিলের পানিতে এক ডুবেই সেরে যাবে যেকোনো রোগ। এখানকার মাটি ও পানি নাকি সর্বরোগের ওষুধ।
ফেসবুকে এমন গুজব ছড়ানোয় গত কয়েকদিন ধরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসী হঠাৎ লক্ষ্য করেন, উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের চেচুয়া বিলের মাঝখানে কচুরিপানা সরে গিয়ে পানি বুদ বুদ করছে। এ দৃশ্য দেখার পর এলাকার কিছু ব্যক্তি এই পানিকে ‘অলৌকিক’ পানি বলে প্রচার করতে শুরু করেন। এই পানিতে গোসল করে নিজেদের রোগ-বালাই ভালো হওয়ার গুজব ছড়ায় কিছু লোক। এরপর থেকে শিশুসহ নারী-পুরুষ ওই বিলের পানিতে গোসল করতে শুরু করেন। ক্রমেই বাড়তে থাকে মানুষের সংখ্যা। রোগ ভালো হওয়ার গুজবের পর অনেকে পানি পানও করতে শুরু করেন। নোংরা ও কাদাযুক্ত পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিশুসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ।
এ ঘটনার পর শনিবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুন নেছা বিউটি, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ উদ্দিন ও ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে চেচুয়া বিলের পানি, মাটি, কচুরিপানা ব্যাবহার না করার জন্য প্রথমে মাইকে আহ্বান জানান। এতে কাজ না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ উদ্দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের লাঠিচার্জের আদেশ দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আজিজুর রহমান জানান, এটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে ময়মনসিংহ হতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য আনা হবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির অবনতি হলে ১৪৪ ধারা জারি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ উদ্দিন।