Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাহাড়ে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন, নায্যমূল্য পাচ্ছে না চাষীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২০ PM
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২০ PM

bdmorning Image Preview


সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান প্রতিনিধিঃ

বান্দরবানে পাহাড়ে জুমের মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। নানাবিধ পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ আর খেতে সুস্বাদু সবজি মিষ্টি কুমড়া। পাহাড়ে উৎপাদিত হালকা মিষ্টি স্বাদের কুমড়া সবজিটি পাওয়া যায় সারা বছরজুড়ে। দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় বলে মিষ্টি কুমড়ার চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। চাহিদা থাকায় বান্দরবানের পাহাড়ে জুমের পাশাপাশি বাড়ছে মিষ্টি কুমড়ার চাষও। কিন্তু বাম্পার ফলনের পরও নায্যমূল্য পাচ্ছে না চাষীরা।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি ও সদরসহ জেলার ৭ উপজেলায় চলতি বছর মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে ৫৫০ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে পাহাড়ের ঢালুতে জুম চাষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এখানে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৯ হাজার মেট্টিক টনের মত মিষ্টি কুমড়া।

গতবারের তুলনায় এ বছর চাষ বেড়েছে ৫০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দেড় হাজার মেট্টিকটনের মত। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বাজারজাত করণের সহজ উপায় না থাকায় নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চাষীরা অভিযোগ কৃষকের।

টংকাবর্তীর চাষী মেনথং ম্রো ও থনলক ম্রো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টংকাবর্তী, মাঝেরপাড়া, সূয়ালক, চিম্বুকসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে জুমে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে এ বছরও। ভালো ফলন হওয়ার পরও নায্যমূল্য পাচ্ছে না তারা। লোকসান কমাতে বাধ্য হয়ে তারা ব্যবসায়ীদের কেজি ৭ থেকে ৮ টাকায় এবং মণ ৩শ' টাকায় বিক্রি করছি। এভাবে চলতে থাকলে মিষ্টি কুমড়ার চাষ বন্ধ করে দিবে চাষীরা।

স্থানীয় শিক্ষক রেংরুই ম্রো বলেন, পাহাড়ে জুম চাষে উৎপাদিত পুষ্টিকর মিষ্টি কুমড়া চট্টগ্রাম হয়ে বিদেশেও যাচ্ছে। কিন্তু মধ্যস্বত্ব ব্যবসায়ীর দ্বিগুন ফুনাফা করার কারণে পাহাড়ে মিষ্টি কুমড়ার চাষ বাড়লেও নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকেরা। শ্রমিকের মজুরীর টাকা না উঠায় অনেক চাষী ক্ষেতের মিষ্টি কুমড়া বিক্রির জন্য বাজারেই তোলেনি। রাস্তার দুপাশে জুম ক্ষেত গুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মিষ্টি কুমড়া।

মধ্যস্বত্ব ব্যবসায়ী মেনইয়া ম্রো বলেন, উৎপাদন বেশি হওয়ায় লাভবান হতে পারছে না কৃষকেরা। পাহাড়ের টংকাবতী থেকে মণ ৩শ' থেকে ৩২০ টাকায় মিষ্টি কুমড়া কিনে গাড়িতে করে চট্টগ্রামে নিয়ে মণপ্রতি ৫শ' থেকে সাড়ে ৫শ' টাকায় বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, গত বছর আমার ত্রিশ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ বছরও লাভবান হতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না। কিন্তু কি করবো? আমি মিষ্টি কুমড়াগুলো না কিনলে চাষীরা কি করবে? কার কাছে এগুলো বিক্রি করবে? সবাই বিপদে পড়বে, তাই ব্যবসায় নেমেছি এ বছরও।

এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন বলেন, পাহাড়ে মিষ্টি কুমড়ার চাষ বাড়ছে। দুটি মৌসুমেই এখানে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে। বলতে গেলে সারা বছরই এ অঞ্চলে বাজারে মিষ্টি কুমড়া পাওয়া যায়। উৎপাদন বেশি হওয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে নায্যমূল্য পাচ্ছে চাষীরা।

তিনি আরও বলেন, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে চাষীরা উৎপাদিত সবজি সরাসরি বাজারে বিক্রি করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সমস্যা থেকে উত্তোরণে চাষীদের কৃষক সংগঠন করে নিজেরাই নিজেদের পণ্য বাজারজাত করণ করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাহলে লাভবান হতে পারবে কৃষকেরা।

Bootstrap Image Preview