রাজনীতিকে গরিবের ভাবির সঙ্গে তুলনা করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, রাজনীতি কার্যত হয়ে গেছে গরিবের বউয়ের ভাউজের মতো। এখানে এখন যে কেউ যেকোনো সময় প্রবেশ করছে কোনো প্রকার বাধা ছাড়া। রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের পথে এটিকে বাধা হিসেবে দেখছেন তিনি।
শনিবার (৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫১তম সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ সমাবর্তন হয়।
তিনি বলেন, আমি যদি বলি আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটির ফিজিকসের লেকচারার অইতাম চাই বা প্রফেসর অইতাম চাই, নিশ্চয়ই ভিসি সাহেব আমারে ঢুকাইতো না। বা আমি যদি কোনো হাসপাতালের ডাইরেক্টরকে বলি এত বড় রাজনীতিবিদ অইছি, এত বছর রাজনীতি করছি এখন আমাদের হাসপাতালে ডাক্তারি করার লাইগ্যা দাও, এখানে তো বোঝেন অবস্থাডা কি হবে! ফিজিকস, ক্যামেস্টি পড়াইতে যাব এ কথা বললে হাসির পাত্র হওয়া ছাড়া কিছুই হবে না। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কথা যদি বলি, এতদিন রাজনীতি করছি সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের পদটা তো দিতে পার? অসুবিধা কি? সেখানে আমাকে দেবে? দেবে না। কিন্তু রাজনীতি গরিবের ভাউজ... সবাই, ইঞ্জিনিয়ারই কইন, আর ডাক্তারই কইন, এই ভিসি সাহেব ৬৭ বছর হইলে উনি বলবেন আমিও রাজনীতি করিব।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘জজ সাহেব যারা আছেন ৬৭ বছর চাকরি করব, রিটায়ার্ড করে কইব আমিও রাজনীতি করিব। আর্মির জেনারেল হয়, সেনাপ্রধান হয়, অনেক আগে রিটায়ার্ডমেন্টে গিয়ে কয় আমিও রাজনীতি করিব। সরকারি সচিব, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, কেবিনেট সেক্রেটারি বা জয়েন্ট সেক্রেটারি রিটায়ার্ড করার পরই বলে আমি রাজনীতি করব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আশার আলো দেখা গেছে। তবে তফসিল ঘোষণা করা হবে তখন এ বিষয়ে আরো জটিলতা তৈরি হবে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলবো নির্বাচনের প্রক্রিয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে তৎপর থাকতে হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা ঠিক হবে না। ডাকসু নির্বাচন হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথে উন্মুক্ত হয়ে যাবে। ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে আসতে হবে।