চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বঙ্গোপসাগরের ফৌজদারহাট থেকে শীতলপুর উপকূলে শিপব্রেকিং জোনে প্রায় ১০ কিমি দীর্ঘ একটি নতুন চর জেগে উঠেছে।
শিপব্রেকিং জোন এলাকায় জেগে ওঠা এই চরের কারণে বেশ কিছু দিন ধরে শিপইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ব্যাহত হচ্ছে, যা হুমকির মুখে ফেলেছে দেশের ভাসমান লৌহখনিখ্যাত জাহাজভাঙা শিল্পকে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জেগে ওঠা এই চর এলাকাটিই হচ্ছে শিপব্রেকিং জোন। এখানে প্রতিনিয়ত স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করা হয়। কিন্তু চরটি জেগে ওঠার পর থেকে এ এলাকার শিপইয়ার্ডগুলোতে আমদানিকৃত স্ক্র্যাপ জাহাজ প্রবেশে দারুণ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ফলে নতুন করে কোনো স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ইয়ার্ড মালিকরা, যা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এ শিল্পে।
এই শিল্প থেকে বার্ষিক ১২০০ কোটি থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় সরকার। জাহাজ আনা বন্ধ হলে ব্যাপক লোকসানে পড়বে দেশ।
সীতাকুণ্ড শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে বেশিরভাগ স্ক্র্যাপ জাহাজ আনার মূল দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী বলেন, হঠাৎ-ই ফৌজদারহাট থেকে শীতলপুর পর্যন্ত ৮-১০ কিমি জাহাজভাঙা শিল্প এলাকার সাগর উপকূলে বিশাল চর জেগে উঠেছে। ঠিক জাহাজভাঙা শিল্প জোন এলাকাতেই এ চর জেগে ওঠায় এখন প্রতিটি স্ক্র্যাপ জাহাজ ইয়ার্ডে প্রবেশকালে বাধার মুখে পড়ে।
তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর শিল্পপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর মালিকানাধীন শিপ আইভান পাপনিন নামক জাহাজটি প্রবেশ করাতে গিয়ে দারুণ প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের।
এদিকে জেগে ওঠা নতুন চরটি নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিপব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ ও ইয়ার্ড মালিকরা। গত শনিবার এ নিয়ে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে দ্য কপার সিমনি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তারিকুল আলম বলেন, জাহাজভাঙা শিল্প এলাকায় যে চর সৃষ্টি হয়েছে তা ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ না হলে শিল্পটির পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হবে। বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিএ) কর্তৃপক্ষ যদি লিখিতভাবে আবেদন করে, তা হলে আমি সরকারের উচ্চপর্যায়ে সমস্যাটি তুলে ধরে সমাধানের চেষ্টা করব।