শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার বাধা দূর করার কৌশল অবলম্বন করে ক্যানসার থেরাপি আবিষ্কার করার জন্য এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল দেওয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের জেমস পি অ্যালিসন এবং জাপানের তাসুকু হোনজোকে। তারা দুজনেই নোবেলের অর্থমূল্য সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।
প্রাণঘাতী ক্যানসারকে রুখে দিতে নতুন থেরাপি আবিষ্কারের কৃতিত্ব স্বরূপ চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী। এদের গবেষণাকর্ম নিয়ে মাস নয়েক আগে একটি বই লেখা ব্রিটিশ চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডেনিয়েল ডেভিস এই প্রতিবেদককে গতকালই ইমেইলে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তারা এ সম্মান পাওয়ার ‘প্রশ্নাতীত দাবিদার’ ছিলেন।
সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট গতকাল এ ঘোষণা দেয়। প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নেয় ক্যানসার। এই রোগ মানুষের ইতিহাসে অন্যতম বড় স্বাস্থ্য সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ। এই ক্যানসার রুখে দিতে শরীরের রোগপ্রতিরোধী ব্যবস্থাকে জোরদার করার কৃতিত্বকে সম্মান জানাল নোবেল কমিটি। আমাদের রোগপ্রতিরোধী কোষগুলোয় একটি বিশেষ প্রোটিন (সিটিএলও-৪) রয়েছে। এটি রোগ নিরাময়ে কোষের স্বয়ংক্রিয় ক্ষমতাকে বাধা দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি টেক্সাসের বিজ্ঞানী অ্যালিসন এই প্রোটিন নিয়ে কাজ করেন। তিনি এই প্রোটিনকে রুখে দিতে অ্যান্টিবডি তৈরি করেন। এই থেরাপির ফলে রোগপ্রতিরোধী কোষেরা ক্যানসার কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
রোগপ্রতিরোধী কোষে নতুন একটি প্রোটিনের (পিডি-১) সন্ধান পান। এটিও কোষের রোগপ্রতিরোধে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তিনি এই প্রোটিনের ‘অপকর্ম’কে রুখে দিতে একটি অ্যান্টিবডি তৈরি করেন। দেখা যায়, এই থেরাপির কারণে ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করে দিতে পারে রোগপ্রতিরোধী কোষগুলো।
শরীরের স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে ক্যানসারের মতো রোগকে পরাজিত করার এমন গবেষণাকর্ম নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে একটি বই লেখেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের বিজ্ঞানী ডেনিয়েল ডেভিস। বইয়ের শিরোনাম : ‘দ্য বিউটিফুল কেয়ার’। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, অ্যালিসন ও হোনজোকে নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কীভাবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘এক কথায় এটা রোমাঞ্চকর যে তারা নোবের পুরস্কার পেলেন। তারা এটার প্রশ্নাতীত দাবিদার ছিলেন।’
নোবের কমিটির সূত্র মতে, আজ পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল ঘোষণা করার কথা।