Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতের অর্থমন্ত্রীর মুখে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রসংশা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৪৯ PM
আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


ভারতের অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রসংশা করেছেন। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ অর্জন, গড় আয়ু ৭২ বছরে উত্তীর্ণসহ বাংলাদেশের বেশকিছু দ্রুত অগ্রগতিশীল খাতের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানা যায়।

মন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে যে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে যে বিষয়েও তারিফ করেন।

২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ৪ দিনব্যাপী মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক স্যানিটেশন কনভেনশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে ভারত সফর করছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ (১ অক্টোবর-২০১৮) দুপুর ১২টায় ভারতের নয়াদিল্লীতে দেশটির বর্তমান কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলির কার্যালয়ে তার সাথে সাক্ষাৎকালে মন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।

অরুন জেটলি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশর ক্রিকেটের উন্নয়নের বিষটিতেও তিনি আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, একটি দেশের ক্রীড়াঙ্গন তখনই উন্নত হতে থাকে যখন সেই দেশ উন্নয়নের দিকে ধাবিত হতে থাকে। বাংলাদেশকে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে আরো বেশী জোর দিতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ভারতের সাথে বহুবিধ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রকৃতপক্ষে ভাল সম্পর্ক, বিশ্বাস, পারস্পারিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ভারতের সাথে সম্পর্কের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তৃতীয় লাইন অফ ক্রেডিটের আওতায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণে ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ, রেলপথ, সড়ক, জাহাজ চলাচল, বন্দরসহ অবকাঠামো খাতে ১৭টি অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই লাইন অফ ক্রেডিটের আওতাধীন প্রকল্পগুলোর বিষয়ও উল্লেখ করে তিনি প্রকল্পগুলো অনুমোদনের জন্য অরুন জেটলিকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনীতি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত এমনকি যদি ভারতে মুল্যস্ফীতি হ্রাস পায় বাংলাদেশে তা হ্রাস পায়।

ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল ও সড়কের মাধ্যমে অত্যন্ত সুন্দর ও সুদৃঢ়ভাবে যোগাযোগ স্থাপিত, এই ব্যবস্থার সুফল মিলবে তখনই যখন দুদেশের মানুষই আর্থিকভাবে লাভবান হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সীমানাও ভারতের মাধ্যমে সুরক্ষিত এবং যেখানে কোন ঝুঁকি নেই।

পরিকল্পনামন্ত্রী এই বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ভারত এই দীর্ঘমেয়াদী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করবে এবং এই সমস্যা সমাধান করতে মিয়ানমারের প্রতি কার্যকরী চাপপ্রয়োগ করে দ্রুত শর্তহীন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে নিরাপদ, টেকসই ও মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে বাংলাদেশের আশা।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশের ডেল্টা প্লান-২১০০ বিষয়েও অরুন জেটলির সাথে আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০ গ্রহণ করেছে। ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এর মাধ্যমে আগামী ১০০ বছরে বাংলাদেশ কোন পর্যায়ে যাবে সেই পরিকল্পনা চলছে। ব-দ্বীপকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এ প্ল্যান। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় বন্যা, নদীভাঙন, নদীশাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনিটি জিনিস হলো বায়ু, পানি ও কৃষি। আর বিশুদ্ধ পানি হলো এর এই তিনটির প্রাণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের নিজেদের মধ্যকার সীমান্ত নদীগুলোর বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে এই খাতকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ করে সুফল ভোগ করছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অসংখ্য সীমান্ত নদী রয়েছে আশা করা যায় বন্ধুপ্রতিম এই দুই দেশ এই খাতে অত্যধিক সফলতা অর্জন করবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অতি দ্রুতই তার বেশীরভাগ নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু করবে। এক্ষেত্রে ভারত আর্থিকভাবে সহযোগিতাসহ ভারতীয় অংশে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নদীগুলোর ভারতীয় অংশে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার জলখাতকে আরো সমৃদ্ধকরনসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।

Bootstrap Image Preview