টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন সময়ে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীকে অশালীন মন্তব্য ও কুপ্রস্তাব দেয়ায় সাঈদুর রহমান নামে এক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে অজ্ঞান করেছে ছাত্রীরা।
সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই অফিসকক্ষে বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজি শিক্ষক সাঈদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকরা। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকরা সাঈদুরকে ধরে বেদম পিটুনি দেন। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর বেলা ১১টার দিকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাঈদুর রহমান বাবুলকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান এ আদেশ দেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুল কালিহাতী উপজেলার পারখী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সাঈদুর রহমান তাদের বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব ও অশালীন মন্তব্য করে আসছিলেন। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারকে জানানোর পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ করা হয়। এ নিয়ে রবিবার সকালে তারা (ছাত্রী) ক্লাসে গেলে প্রধান শিক্ষক এসে তাদের স্কুল থেকে বের করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সাঈদুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই বলে স্বাক্ষর নেন।
স্কুল ছুটি শেষে ছাত্রীরা অভিভাবকদের বিষয়টি জানান। সোমবার সকালে ক্লাসবর্জন করে অফিসকক্ষে বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজি শিক্ষক সাঈদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সাঈদুর কৌশলে পালানোর চেষ্টা করেন।
শিক্ষার্থীরা সাঈদুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
হয়রানীর শিকার ওই ছাত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সাঈদুর রহমান বাবুল তাদের অনেককে বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারকে জানানোর পরও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার জানান, তিনি ছাত্রীদের কাছ থেকে কোনো স্বাক্ষর নেননি। শিক্ষক সাঈদুরকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্রীদের দাবি এবং লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইল থানার ওসি সায়েদুর রহমান জানান, জড়িত শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আশরাফুল মোমিন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়েই বিদ্যালয়ে ছুটে এসেছি। অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। কেউ যদি বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করে তাহলে মামলা নেওয়া হবে।