Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবশেষে নিলামে উঠছে জাজ মাল্টিমিডিয়ার আজিজের সম্পত্তি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৩৭ PM
আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৩৭ PM

bdmorning Image Preview


খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করায় রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজের সম্পত্তি অবশেষে নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেড। এ ঘটনায় জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার ৮ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও শাখার বৈদেশিক ব্যবসার লাইসেন্স (এডি লাইসেন্স) স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অধিকতর তদন্তও হয়েছে। তবে তদন্তে পর্দার আড়ালে ছিল জাজ মাল্টিমিডিয়া।

জনতা ব্যাংক বলছে, এই আব্দুল আজিজই হচ্ছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার। তবে ব্যাংকের এই দাবি অস্বীকার করেছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার। এরআগেও তিনি অস্বীকার করে বলেছিলেন, রিমেক্স ফুটওয়্যারের সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে ৩০ সেপ্টেম্বর রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ঋণের অর্থ আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটি।

চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসায় দুই ভাই এমএ কাদের ও এমএ আজিজ ২০১৩ সাল-পরবর্তী পাঁচ বছরে জনতা ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। দুই ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বর্তমানে ২ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে জনতা ব্যাংকের। এর বাইরে পণ্য রফতানির ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকাও আটকে গেছে।

এর আগে ৩১ জুলাই জনতা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম এ আজিজের নামে একটি চিঠি ইস্যু করে। রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস লিটুল জাহান মিয়া।

৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানটির কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ১ হাজার ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৯ টাকা। রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড কেউ কিনতে চাইলে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অথবা দিলকুশা লোকাল অফিসে দরপত্র জমা দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে যে ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন, সেখানে শীর্ষ দশের নাম রয়েছে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী দুই প্রতিষ্ঠান রিমেক্স ফুটওয়্যার ও ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড। এর কর্ণধার দুই ভাই এমএ আজিজ ও এমএ কাদের। ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে তারা বের করে নিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এ দুই ভাই এখন জনতা ব্যাংকেরও শীর্ষ ঋণখেলাপি।

বর্তমানে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত নাম জাজ মাল্টিমিডিয়া। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও বিনিয়োগ করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে বেশ কয়েকটি ব্যবসা সফল সিনেমাও হয়েছে।

সংসদে প্রকাশ করা শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এমএ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার রয়েছে তৃতীয় স্থানে। শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড রয়েছে দশম স্থানে। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এমএ আজিজের বড় ভাই এমএ কাদের।

এ প্রসঙ্গে আবুল আজিজ বলেন, ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের আমার ভাই। তবে তিনি জনতা ব্যাংক থেকে কোনও টাকা নেননি। রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুছ ছালাম আজাদ বলছেন, রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজকে আমরা এম এ কাদেরের ভাই বলেই জানি। যিনি সিনেমা তৈরি করেন।

জানা গেছে, চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসায় দুই ভাইকে উদার হাতে ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। ২০১৩ সাল-পরবর্তী পাঁচ বছরেই জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন এমএ কাদের ও এমএ আজিজ। এরমধ্যে পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। দুই ভাইকে দেওয়া জনতা ব্যাংকের এ ঋণের বড় অংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই ভাই-ই নাম লিখিয়েছেন শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির তালিকায়।

এমএ আজিজকে দেয়া চিঠিতে ব্যাংকের সব দায় পরিশোধের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল। রিমেক্স ফুটওয়্যার নির্ধারিত সময়ে জনতা ব্যাংকের পাওনা অর্থ পরিশোধ না করায় অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ১২ ধারার বিধান মোতাবেক ঋণের বিপরীতে বন্ধকি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিলামে বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview