শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, 'শিক্ষা আমাদের অগ্রাধিকার কিন্তু কারিগরি শিক্ষা অগ্রাধিকারের অগ্রাধিকার। আমাদের লক্ষ দেশীয় উদ্ভাবনের বাণিজ্যিকীকরণ।'
বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে ‘স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার হার মাত্র ১৪ শতাংশ, কারণ অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের কারিগরি শিক্ষা দিতে চায় না। অথচ ইউরোপিয়ান দেশগুলতে কারিগরি শিক্ষার হার ৫৫ থেকে ৮০ শতাংশ। যার কারণে অনেকদিন আমাদের উদ্ভাবনী চিন্তা-চেতনা জন্ম নেয়নি।
‘স্কিলস কম্পিটিশন’র গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, এই কম্পিটিশনগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তি তৈরি করতে উৎসাহিত হচ্ছে, শিল্প-সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। একইসাথেই দেশীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা জানতে পারছে আমাদের দেশের সৃজনশীল এবং সাশ্রয়ী আবিষ্কার সম্পর্কে।
শিক্ষামন্ত্রী প্রতিযোগিতাটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার সময় আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশ। কাজেই আমাদের প্রতিনিয়ত পাশের দেশগুলোর সাথে টেক্কা দিয়ে প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং শিল্পে টিকে থাকতে হবে। এ জন্য দক্ষতার কোন বিকল্প নেই। কারিগরি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য দক্ষতা বৃদ্ধি করা যাতে বেকারত্ব মোকাবিলা করা যায়।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর ১ কোটি ১২ লাখ ছাত্র প্রতি বছর টেকনিক্যাল থেকে পাশ করে দেশের বাইরে চলে যায়। তাদের পরিশ্রমের বিনিময়ে উপার্জিত অর্থ হতে ৫ বিলিয়ন টাকা তারা প্রতি বছর বিদেশের মাটিতে ফেলে আসে শুধুমাত্র দেশীয় কর্মসংস্থানের অভাবে। এ ছাড়া শুধু চাকরি নয়, উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নও দেখতে হবে। এ জন্য দেশ, কাল ও বাজারের চাহিদার সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ একটি পাঠ্যক্রম তৈরি করতে তৎপর সরকার। পরিকল্পনা চলছে কারিগরি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠারও।
অনুষ্ঠানে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর বলেন, পরবর্তীতে এ ধরণের উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডের জন্য শিক্ষা বাজেটে একটি বিশেষ খাত তৈরির ব্যবস্থা থাকবে এবং বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের বিশেষ অনুরোধে প্রত্যেকটি নতুন আবিস্কারের পেটেন্ট করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোডের্র চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র অপারেসন্স অফিসার ড. মোখলেছুর রহমান এবং স্টেপ প্রকল্প পরিচালক এবিএম আজাদ।
প্রসঙ্গত, এ বছর প্রতিযোগিতাটিতে অংশ নিচ্ছে ১০০ টি উদ্ভাবনী প্রকল্প। কারিগরি শিক্ষায় সার্বজনীন উৎসাহ যোগাতেই সংগঠিত হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এই প্রয়াস।