স্কুল থেকে ফেরার পথে সহপাঠীর হাত ধরেছিল বছর তেরোর ছেলেটি। চকোলেটও দিয়েছিল। ‘অপরাধ’ ওইটুকুই। উচ্চবর্ণের সেই ছাত্রীর পরিবার কিশোরের ‘স্পর্ধা’ মানতে পারেনি। উপযুক্ত শাস্তি দিতে তফসিলি জাতির সেই ছেলেটিকে নগ্ন করে পেটাতে পেটাতে নিয়ে যায় গ্রামের পঞ্চায়েতের কাছে। ঘটনা মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরের।
মারধরের পর রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়ে কিশোরটি। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কোলহাপুরের অজরা থানার ওই ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রেফতার করে ওই মেয়েটির দুই আত্মীয়কে।
ওই কিশোরী বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবাকে চকলেট দেয়ার কথা জানায়। তারা এটা শুনে রেগে যায়। কেননা ওই ছেলেটি সমাজের নিম্ন-বর্ণের। বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারেনি তারা। কিশোরীকে পাঠিয়ে দেয়া হয় মুম্বাইয়ে তার চাচার বাসায়।
শুক্রবার মুম্বাই থেকে তার চাচা গ্রামে এসে কিশোরের বাড়িতে যান। নিম্নবর্ণের হওয়া সত্ত্বেও কেন তার ভাইঝিকে চকলেট দিয়েছে এ নিয়ে কিশোরের পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।
কথাবার্তা চলাকালীন আচমকাই কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যান তিনি। পরে ঘরে তালাবদ্ধ করে কিশোরকে বেধড়ক মারধর করেন। পরিবারের কথা ভ্রুক্ষেপ না করেই উলঙ্গ অবস্থায় বাড়ি থেকে নিয়ে যান কিশোরকে। উলঙ্গ অবস্থাতেই পুরো গ্রাম ঘোরানো হয় কিশোরকে। এরপর কিশোর মারাত্মক অসুস্থ হলে স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে কিশোরের পরিবার। পুলিশ এখন পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫২, ৩২৩ ও ৫০৪ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।