Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্বপ্ন ছিল চাকরি করবো, মার মুখে হাসি ফোটাবো কিন্তু....

শাকিল নিয়াজ, খুবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:২৪ AM
আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:২৪ AM

bdmorning Image Preview


বেকারগ্রস্থ জীবন, পারিবারিক  হতাশা   মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে স্বেচ্ছায় বিদায় নিল  সৈকত  রঞ্জন নামে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ এন্ড মেরিন রিসোর্স  টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের (এফ এম আর টি) '১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী।  

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের খানজাহান আলী হলের পূর্বপার্শ্বে  একটি দোতলা ভবনের মেছের রুমে থাকতেন। গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার  রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঐ  মেছ রুম থেকে প্রতিবেশীদের খবরের ভিত্তিতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন উপস্থিত ছিলেন।

তার এক সহপাঠী জানান, দাদার কালকেই একটা জব(প্রাইভেট)এ জয়েন করার কথা ছিল। অথচ আজ সে কোথায়। গত কয়েক সপ্তাহ আগে তার বাবাও বিদায় নিয়েছিল। বিগত দু’বার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তার পড়ার টেবিলে চাকরি সংক্রান্ত অনেক বই। তার  ড্রয়ার থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি হতাশা থেকে বাঁচতে ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছিলেন।

তার রুম থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির একটি পাতায় লেখা রয়েছে- ‘অনেক স্বপ্ন ছিল চাকরি করবো, মার মুখে হাসি ফোটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেলো। মার শরীর খুব খারাপ। তবুও আমি খুলনা থেকে পড়ার কথা ভাবছি। বাড়িতে যেতে গেলে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই। না আছে টিউশনি, যার উপর নির্ভর করে খুলনায় চলছিলাম। কোনো চাকরিতেও ভয় পাচ্ছি। আজ এতো কঠিন অবস্থা তৈরি হয়ে গেলো। আমি শুধু বন্ধুদের কে কি করছে সেই দিকে খেয়াল করে চলছি। আমরা এক মেসে চার বন্ধু থাকতাম। এর মধ্যে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। অন্য তিনজন চাকরি পেয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি কাজ করতে করতে সেটা ছেড়ে দিয়ে BCS এর দিকে যাওয়ায় হঠাৎ চাপ বেড়ে যায়। সে জন্য আমি আরও Abnormal Behaviour প্রদর্শন করছি। প্রজেক্টের কাজে চাপ থাকায় শরীরটা গড়তে পারিনি। সে জন্য অতিরিক্ত চাপ সহ্য হয়নি।’

হরিনটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির খান বিডি মর্নিংকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি যে, আরো দুইবছর আগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করলেও চাকরি না পাওয়াতে হতাশার কারন থেকেই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।  তার মরদেহ  অ্পাতত তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

উলেখ্য, মৃত সৈকত  রঞ্জনের   বাবার নাম কৃষ্ণ মন্ডল, মায়ের নাম রানী মন্ডল। গ্রামের বাড়ি রমজাননগর ইউনিয়ন, শ্যামনগর থানা, সাতক্ষীরা জেলা। তিনি সাতক্ষীরা থেকেই এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পাশ করেন।

Bootstrap Image Preview