Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নওয়াজ শরীফের মুক্তির পেছনের রহস্য!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪০ AM
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪০ AM

bdmorning Image Preview
ছবি: ইন্টারনেট


দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এছাড়া মুক্তি পেয়েছেন তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও মরিয়মের স্বামী মোহাম্মদ সফদার।

বুধবার সন্ধ্যায় আদিয়ালা কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়। দশ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) প্রধান নেতা জেলে গিয়েছিলেন। দুই মাস জেল খাটার পর মুক্ত হলেন এই নেতা।

নওয়াজ শরীফের এরকম আকস্মিক মুক্তির পর, এ নিয়ে নানান গুঞ্জন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে কাদের প্রভাবে এত দ্রুত কারা মুক্তি পেলেন নওয়াজ।

নওয়াজের এ কারামুক্তির পেছনে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রিয়াদ সফরের সম্পর্ক রয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার মদিনা-মুনাওয়ারা সফর করেন এবং বুধবার সকালে জেদ্দায় সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

সৌদি গণমাধ্যমে এসব বৈঠকের খবর প্রচারিত হলেও আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের উপায় এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

বুধবার সকালে ইমরান খান যখন সৌদি রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত নওয়াজ শরিফের আটকাদেশ স্থগিত করে জামিনে তার মুক্তির রায় দেন।

এর আগে ১৯৯৯ সালে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থান করলে সৌদি আরবের হস্তক্ষেপে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে রিয়াদে আশ্রয় পেয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।

মুক্তি পেলেন নওয়াজ-মরিয়ম

আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেলেন দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও মরিয়মের স্বামী মোহাম্মদ সফদার। খবর ডন, বিবিসি।

বুধবার দুপুরে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডাদেশের রায় স্থগিতের আদেশ দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। নওয়াজের সঙ্গে তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও মরিয়মের স্বামী মোহাম্মদ সফদারের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশের রায়ও স্থগিত করা হয়।

বুধবার পাকিস্তানের ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ বলেন, বেশকিছু অ্যাপার্টমেন্টের মালিকানায় নওয়াজের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে তার পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের মৃত্যুর এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি পেলেন নওয়াজ শরিফ। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কুলসুম। ওই সময় কয়েক দিনের জন্য প্যারোলে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন পাকিস্তানের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

আনুষ্ঠানিকতা শেষে কবে মুক্তি পাবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে বুধবার সন্ধ্যায়ই মেয়ে-জামাতাসহ দেশটির আদিয়ালা কারাগার থেকে মুক্তি পান নওয়াজ শরিফ।

দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা এবং নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফ মুসলিম লিগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নওয়াজ শরিফকে অভ্যর্থনা জানাতে আদিয়ালা কারাগারে যান। ফুল নিয়ে নওয়াজের গাড়িবহরকে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির হন দলের নেতাকর্মীরাও।

কারাগার থেকে চাকলালা বিমানঘাঁটিতে যায় নওয়াজের গাড়িবহর। সেখান থেকে ব্যক্তিগত হেলিকপ্টারে করে লাহোরে পৌঁছান নওয়াজ শরিফ। লাহোরে নওয়াজের দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাকে স্বাগত জানান।

পাকিস্তানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, এটা অনেক বড় বিজয়। এ রায় প্রমাণ করেছে যে নওয়াজ, মরিয়ম ও সফদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি ভিত্তিহীন।

আদালতের রায়ের পর আদালত কক্ষ ও এর বাইরে উপস্থিত নওয়াজের সমর্থকরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারা নওয়াজের পক্ষে নানা স্লোগান দেন।

দুর্নীতির দায়ে গত ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছর, মরিয়মকে সাত বছর ও সফদারকে এক বছরেরর কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। ১২ জুলাই নওয়াজ ও মরিয়ম লন্ডন থেকে লাহোরে ফিরলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নওয়াজের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলো।

Bootstrap Image Preview