Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

৫ বছরের সাজার বিধান রেখেই সংসদে পাস ‘সড়ক পরিবহন আইন'

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:১১ AM
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:১১ AM

bdmorning Image Preview


বেপরোয়া মোটরযান চালানোর কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলে ৫ বছরের করাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বিলসংসদে পাস হয়েছে।

প্রাণহানির দায়ে অভিযুক্তদের অপরাধ জামিনযোগ্য নয়, এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধ আপোষ মিমাংসার জন্য পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সদ্য পাস হওয়া এই আইনে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের বুধবারের বৈঠকে বিলটি সংসদের স্থিরিকৃত আকারে পাস করার প্রস্তাব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিল পাসের আগে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, অনেকে শুধু ৫ বছর সাজা দেখেন। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন দুর্ঘটনা প্রমাণিত হলে প্যানাল কোডের ৩০২ ধারা মোতাবেক অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া যাবে।

যাবজ্জীবনেরও বিধান আছে বলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তবে আইনে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখিত নেই। এরআগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাবগুলো কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলে অপরাধ, বিচার ও দণ্ড অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে পেনাল কোডের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৮৯-এ ভিন্নতর কিছু না থাকলে, সাব ইনসপেক্টর বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা আদলতে অবহিত করলে এ আইনের অধীনে সব অপরাধ আমলযোগ্য হবে। তবে আইনের ৮৪ (মোটরযানের কারিগরি ত্রুটি), ৯৮ (ওভারলোডিং ও বেপরোয়াগতি মোটরযান চালানো) ও ১০৫ (দুর্ঘটনা সংক্রান্ত অপরাধ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধসমূহ ছাড়া অপর সব অপরাধ জামিনযোগ্য হবে।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ বা সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে এ আইনের ৬৬ (ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো), ৭২ (রেজিস্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালালে), ৭৫ মোটরযানের ফিটনেস না থাকলে), ৮৭ (মোটরযানের গতি অনিয়ন্ত্রিত হলে), ৮৯ (ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে) এবং ৯২ (নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করে গাড়ি চালালে) ধারায় বর্ণিত অপরাধসমূহ আপস মিমাংসা করতে পারবেন।

আইনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলঃ

১. বিদ্যমান আইনের ১১৭টি ধারা ও ১২টি তফসিলের স্থলে ১৪টি অধ্যায়ে ১২৬টি ধারা।

২. নিরাপদ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিকরণের জন্য সময় সময়, এক বা একাধিক বিষয়ে আদেশ প্রদান এবং নীতিমালা প্রণয়নের বিধান।

৩. সড়কের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ব্যক্তি বা পরিবার বা প্রতিষ্ঠান বা কোন এলাকার জন্য মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বা সীমা নির্ধারনের বিধান।

৪. মোটরযান চালকের দোষসূচক পয়েন্ট কর্তনের ক্ষেত্রে এতদ্‌সংক্রান্ত প্রেক্ষাপট বিবেচনার জন্য বিধান।

৫. ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অন্যূন ৮ম শ্রেণি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

৬. কন্ডাক্টারদের সনদ দেওয়া বিধান।

৭. প্রতিবন্ধীবান্ধর মোটরযান প্রবর্তন এবং গণপরিবহনে নারী, শারিরীক প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুদের জন্য আসন সংখ্যা নির্ধারণ।

৮.মোটরযান চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে চালকের সিটবেল্ট বাধা, গাড়ি চালনার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা, সংরক্ষিত আসনে না বসা, বিপরীধ দিক থেকে মোটরযান না চালানো, যাত্রীদের সাথে সৌজন্যমুলক ব্যবহার ইত্যাদি বিধান।

৯.পরিবহন সেক্টরে উন্নত সেবার জন্য জিডিটাইজেশন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিধান।

১০. সরকারি কর্মচারীদের অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা ত্রুটিপূর্ণভাবে পালনের কারণে দূর্ঘটনা ঘটলে বা কোন সড়কের ডিজাইন বা নির্মাণ বা রক্ষনাবেক্ষনজণিত বা তদারকির ওপর বর্তাবে এবং প্রচলিত আইনে বিধান হবে।

১১. আন্তঃরাষ্ট্রীয় ও উপআঞ্চলিক মহাসড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণের বিষয়টি বিবেচনা করে বিদেশ হতে আগত যানবাহন ও চালকের রুট পারমিট প্রদান।

১২.যাত্রীদের জন্য বীমা ঐচ্ছিক রেখে তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা তহবিল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যাত্রী বা তৃতীয় পক্ষ ব্যতিত শুধুমাত্র মোটরযান বীমা অব্যহত রাখার বিধান।

১৩. টার্মিনাল ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনয়ন এবং জনস্বার্থে স্বচ্ছ ও চাঁদাবাজিমুক্ত করার বিধান।

১৪.সড়ক বা মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হাট-বাজার, দোকানপাটসহ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ বা তাৎক্ষনিকভাবে অপসারণের বিধান।

১৫. মোটরযান মালিকদের সুবিধার্থে বিআরটেএর যেকোন সার্কেল হতে ফিটনেস নবায়নের বিধান।

১৬.নতুন বা ব্যতিক্রমধর্মী মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন প্রদানের বিধান অন্তর্ভুক্তিকরণ।

 

Bootstrap Image Preview