Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্নাতকোত্তর ভর্তি ফি কমানোর দাবি কুবি শিক্ষার্থীদের

মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ, কুবি প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:৫২ AM
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:৫২ AM

bdmorning Image Preview


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হতে বাড়তি ফি গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ৪ থেকে ৭ হাজার টাকায় শিক্ষার্থীরা ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারে, সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তরে ভর্তিতে ব্যয় হয় ৩ থেকে ৪ গুন টাকা। যে টাকা সংগ্রহ করা সদ্য স্নাতক শেষ করা একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে কষ্টকর।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীকে স্নাতক চার বছর মেয়াদী কোর্সে ভর্তি হতে প্রথমে জমা দিতে হয় ১২ হাজার ৭৬০ টাকা। পরে প্রতিবছরে ৩ বারে প্রায় ৪ হাজার ৫০ টাকা করে জমা দিতে হয়। এ হিসাব অনুযায়ী  স্নাতক কোর্সে চার বছরের জন্য মোট জমা দিতে হয় ২৪ হাজার টাকা। যা প্রতি বছর হয় ৬ হাজার টাকা করে। কিন্তু স্নাতকোত্তর কোর্সে একবছরের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে অনুষদ ভেদে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বাবদ  প্রায় ৯ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা গুনতে হয়। তারপরে বিভাগ ও ডিন অফিস মিলিয়ে আরো গুনতে হয় ২ হাজার টাকা। এছাড়া বিভাগ ভিত্তিক ক্লাব/সোসাইটির জন্য জমা দিতে হয় ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। সবমিলিয়ে শুধু এক বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হতেই গুনতে হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ভর্তি হতে একজন শিক্ষার্থীকে অনুষদ ভেদে ব্যয় করতে হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। তেমনি ভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৩ হাজার ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে  ৪ হাজারের মত খরচ হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীকে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে দিতে হয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরও কেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রায় তিন থেকে চার গুণ টাকা দিতে হবে তা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্নাতক শেষ হয়ে মাত্র স্নাতকোত্তর কোর্সে ২০১৭-১৮ সেশনে ভর্তি হয়েছেন বাংলা বিভাগের জাহিদুল ইসলাম মানিক। তিনি বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানেরা ভর্তি হয়। যাদেরকে সাধারণত স্নাতকে পড়াকালীন সময়েই বাড়ি থেকে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়। টিউশনি করিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদেও খরচ চালায়। তাই  স্নাতকোত্তর ভর্তি হতে এতগুলো টাকা জোগাড় করতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক শিক্ষার্থীকে না খেয়ে থাকতে হয়।

সদ্য স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হবেন এমন কিছু শিক্ষার্থী বলেন, “প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি ফি শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে। সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে গেলে সব ফি মিলেয়ে গুনতে হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। যা আমাদের জন্য খুব চাপ হয়ে যায়।” তারা আশা করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে স্নাতকোত্তর ভর্তি ফি কমিয়ে আনবে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, স্নাতকোত্তর ভর্তিচ্ছুদের উপর প্রশাসন অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ভর্তি ফি চাপিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগ এ নিয়ে আগেও আন্দোলন করেছে ভবিষ্যতেও এমন যৌক্তিক দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদেও পাশে থাকবে।

স্নাতক শেষ করা একজন শিক্ষার্থীর এত টাকা জোগাড়ের সমস্যা চিন্তা করে স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি ফি কমানো যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, “স্নাতকোত্তর ভর্তির ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও ফিন্যান্স কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তি ফি এর ব্যয়ের যৌক্তিকতা পর্যালোচনা করে দেখছে।” 

Bootstrap Image Preview