নিজস্ব প্রতিবেদক
ভাষাসৈনিক ও মরমী কবি ইঞ্জিনিয়ার সাবির আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগ না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো কিনা সন্দেহ আছে। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই আজকের বাংলাদেশের সৃষ্টি।
অাজ শনিবার রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে ভাষা আন্দোলন গবেষণাকেন্দ্র ও জাদুঘর ও ভাষা আন্দোলন স্মৃতিরক্ষা পরিষদের উদ্যোগে 'পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা-না উর্দু?' শীর্ষক পুস্তিকার ৭০তম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভাষা আন্দোলন গবেষণাকেন্দ্র ও জাদুঘরের সভাপতি পিয়ারি মাহবুবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিক রেজাউল করিম, তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আবুল কাসেমের ছেলে কামরুল আহসান, কাজী মোতাহার হোসেনের মেয়ে ফাহমিদা খাতুন, বাংলা একাডেমি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক ফজলে রাব্বী, ভাষা আন্দোলন গবেষণাকেন্দ্র ও জাদুঘরের নির্বাহী পরিচালক ভাষা আন্দোলনের গবেষক এম আর মাহবুব।
১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ৩১ দিনের মাথায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে তা নিয়ে পুস্তিকাটি প্রকাশ করা হয়।
সাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, আল্লাহ তা'য়ালার সৃষ্টি এই সুন্দর পৃথিবীটাকে আমরা মানুষরা ধ্বংস করে ফেলছি। এক সময় দেখা যাবে যে মানুষই ধ্বংস হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত 'পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা-না উর্দু?' পুস্তিকাটি প্রকাশের মাধ্যমে। আর বাংলাদেশই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যা ভাষাকে কেন্দ্র করে স্বাধীন হয়েছে। ইংরেজরা মুসলমানদের কাছ থেকে ভারতবর্ষটি কব্জা করেছিল। তারা মুসলমানদের সকল দিকে অত্যাচার করতো। সে জন্যে ইংরেজদের শিক্ষায় মুসলমানরা যায়নি। এক সময় ভারত স্বাধীন করার জন্যে আন্দোলন শুরু হয়। ফলে ভারতবর্ষ ভেঙে পাকিস্তান-ভারত হয়। এই ভারতবর্ষ ভাগ না হলে হয়তো বাংলাদেশ হতো না।
পুস্তিকাটিতে তিনটি প্রবন্ধ ছিল। যার মধ্যে অধ্যক্ষ আবুল কাসেম, আবুল মনসুর আহমদ ও কাজী মোতাহার হোসেনের লেখা একটি করে প্রবন্ধ ছিল।
অধ্যাপক ফাহমিদা খাতুন বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন তার প্রবন্ধ লিখেছিলেন ভাষা নিয়ে এমন ধূম্রজাল তৈরি হলে এক সময় দুটি দেশ এক থাকবে না। এটি তিনি তখন বুঝতে পেরেছিলেন।
ভাষাসৈনিক রেজাউল করিম বলেন, ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব ১৯৫২ সালে হলেও ১৯৪৭ সালে এটির বীজ বপন করা হয়েছিল তমদ্দুন মজলিসের 'পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা-না উর্দু?' পুস্তিকার মাধ্যমে।
ফজলে রাব্বী বলেন, বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে গবেষণার দিকে মন দিতে হবে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, জাপান, চীন, ভিয়েতনামসহ সবাই নিজ ভাষায় দক্ষ অর্জন করে শিক্ষিত হয় অথচ আমাদের ছেলে-মেয়েরা এখন ইংরেজি মিডিয়ামের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
ডা. মুক্তাদির হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সৈয়দ রেজাউল করিম, গোলাম কিবরিয়া, ড. মুন্তাজুর রহমান, একে এম রেজাউল করিম, সাবরিয়া আহমেদ চায়না, স ম ইফতেখার মাহমুদ, ফারুক আহমাদ আরিফ প্রমুখ।