ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর ধামডাঙ্গী গ্রামের বৃদ্ধ রোকমত আলী। জুয়াখেলায় নিজের ছেলে মাজহারুল ইসলাম (১৮) কে বারবার বাধা-নিষেধ করেও থামাতে না পেরে বাধ্য হয়ে ২ বছর আগে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি। পরে তার স্ত্রীর অনুরোধে জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন শ্বশুড় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ।
এরপর কিছুদিন ভালভাবে চলাফেরা করলেও গত কয়েকদিন ধরে আবার এলাকার কিছু জুয়ারু ছেলেদের সাথে মিশে পুনরায় জুয়ার নেশায় আসক্ত হচ্ছে ছেলে মাজহারুল।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রতিবেদককে এ অভিযোগ করেছেন ওই বৃদ্ধ। তিনি তার ছেলে মাজহারুল ইসলামকে আবারও পুলিশের হাতে সোপর্দ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের ধনিবস্তী, ধামডাঙ্গী ও ময়মনসিংহ পাড়ার কিছু ছেলে সম্প্রতি এলাকার বাঁশঝাড়, আমবাগান এমনকি রাতের আধারে ঘরে বসাচ্ছে জুয়ার আসর। স্থানীয়রা বারবার বাঁধা দিলেও তোয়াক্কা করছে জুয়ারুর দল। এতে একদিকে যেমন সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে ভ্রান্ত ধারণা এবং পথভ্রষ্ট হচ্ছে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ওই এলাকার শির্ক্ষাথীরা।
ভানোর ময়মনসিংহ পাড়ার মুক্তিযোদ্ধা আঃ সাত্তারের স্ত্রী জয়নব বানু বলেন, গত বছর জুয়ারুদের জুয়া খেলার আসর বসিয়েছিল আমার বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে। ওই খেলায় বাঁধা দেওয়ার কারণে আমি ও আমার মেয়েকে মারপিট করে আমার ঘর ভেঙ্গে দিয়েছিল জুয়ারুরা। সেই ভয়ে আমি এখন বাঁধা দিতে ভয় পাচ্ছি।
ভানোর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক সইদুর রহমান বলেন, তরিকুল মানিক, আমিরুল ও আজহারুলসহ বেশ কয়েকজন যেখানে যেখানে জুয়ার আসর বসাচ্ছে।
গত বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) ও বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আমিসহ স্থানীয়রা বাঁধা দিলে আমাদেরকে নানান ধরণের হুমকি দেয়।
ভানোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব সরকার বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। ওই এলাকার লোকজন আমাকে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে আমি থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে জুয়া খেলা বন্ধের চেষ্টা করবো।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি এবিএম সাজেদুল ইসলাম বলেন, জুয়ার আসর বন্ধ ছিল। পুনরায় জুয়া খেলা শুরু হয়েছে এটি জানা ছিল না। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ক্যারাম বোর্ড, ক্রিকেট খেলা, ফুটবল খেলার হারাজেতা নিয়ে চলছে জুয়া খেলা। এ সমস্ত জুয়াখেলায় বেশির ভাগ স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জড়িত বলে অভিযোগ সচেতন মহলের।