Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'যখনই সন্তান ধারণের খবর জানতে পায় তখনই স্বামী ও সৎ ছেলে নষ্ট করে দেয়'

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৫ AM
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:২৬ AM

bdmorning Image Preview


বিয়ের আট বছরে তিনবার সন্তান ধারণ করেছি। যখনই সন্তান ধারণের খবর জানতে পায় তখনই স্বামী ও সৎ ছেলে মিলে কৌশলে আমার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে দেয়। নষ্ট করতে রাজি না হলে শারীরিক নির্যাতন করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তান নষ্ট করে ফেলি এমনটিই ছিল আকলিমা আক্তার নামে এক প্রসূতি মায়ের কথা।

আকলিমা আক্তার। ২০১০ সালে কামরুজ্জামান মোল্লার সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর এখন পর্যন্ত তিনবার অন্তঃসত্ত্বা হন ৩০ বছর বয়সী আকলিমা। কিন্তু দুবার স্বামী ও সৎ ছেলের নির্যাতনে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে হয়েছে তাকে।

আকলিমা এখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামী ও ছেলের চাপে সেই সন্তান নষ্ট করতে না চাওয়ায় তাকে গত মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বেধড়ক পেটানো হয়। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এখন তিনি বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র জানান, আকলিমা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার বাঁ চোখের নিচে এবং শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারণে রক্ত জমে গেছে।

জানা যায়, ২০১০ সালে বরগুনার বেতাগী উপজেলার গেরদো লক্ষ্মীপুরা গ্রামের কামরুজ্জামান মোল্লা আমতলী পৌর শহরের মিঠা বাজার এলাকার মেসের মল্লিকের মেয়ে আকলিমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর সন্তান গর্ভে ধারণ করার কথা শুনলেই তাকে পেটান স্বামী কামরুজ্জামান ও তার ছেলে শাহীন মোল্লা। এভাবে দুটি সন্তান নষ্ট করেন আকলিমা।

এবারও আকলিমার চার মাসের অন্তঃসত্ত্বার খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেই সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেন স্বামী কারুজ্জামান। এ কথা না শোনায় কামরুজ্জামান ছেলে শাহীন মোল্লাকে নিয়ে স্ত্রীকে পেটান।

মারধরের একপর্যায়ে আকলিমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। মারধর শেষে আকলিমাকে রাতে ঘরে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে গতকাল বুধবার রাতে আকলিমার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আকলিমা আক্তার জানান, তারা এখন আবার আমার পেটের সন্তানকে নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে সৎ ছেলে শাহীন ও স্বামী কামরুজ্জামান মারধর করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিয়ের সময় আমার বাবা তার জামাতাকে ফুচকা ব্যবসার জন্য ২০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছে। আমার বাবার মৃত্যুর পরে বাবার রেখে যাওয়া জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা এনে দিয়েছি। আমার সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

আকলিমার স্বামী কামরুজ্জামান মোল্লা সন্তান নষ্ট করার চেষ্টার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘কথা কাটাকাটির একপর্যায় ছেলে (শাহীন মোল্লা) ওর মাকে কয়েকটি কিল ঘুষি মেরেছে মাত্র।’

এ বিষয়ে আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রেজাউল করিম বাদল জানান, খবর পেয়ে রাতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

Bootstrap Image Preview