Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রিকশার পেছনে টিনের প্লেটে লেখা নম্বরেই হত্যারহস্য উম্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৫ PM
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


বিডিমর্নিং নারী ডেস্কঃ

কাশবনের ভেতর পরিত্যাক্ত একটি রিকশার পেছনে লেখা নম্বরের সূত্র ধরেই রিকশাচালক অপিন্দ্র দাস (৪২ ) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের বলি হয়েছেন এই রিকশাচালক।

এ ঘটনায় স্ত্রী পূর্ণিমা রায় এবং তাঁর কথিত প্রেমিক তোতা মিয়াকে(৩৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূর্ণিমা রায়ের প্রেমের কথা এলাকার অনেকেই জানত। পরবর্তীতে তাঁর স্বামীর কাছে ধরা পরায় অনেক বকাঝকা শুনতে হয় পূর্ণিমাকে। এরপরই তাদের মাথায় আসে এই জঘন্য চিন্তা।

গত ১৯ অগাস্ট, রাত ৯টায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বেড়ি বাঁধের কাছে ফিউচার টাউন নামে একটি হাউজিং প্রকল্পের ভেতরে একটি খালি প্লটে কাশবনের ভেতর থেকে একটি বেনামা লাশ খুঁজে পায়। একদিন বাদে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একটি রিকশাও উদ্ধার করেন তারা। পরবর্তীতে ওই রিকশার পেছনের টিনের প্লেটে লেখা নম্বর ও কার্যালয় এর জের ধরেই উদ্ঘাটন হয় এই বিশাল হত্যারহস্য।

এ ব্যাপারে ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, উদ্ধার হওয়া রিকশাটি ঢাকা সিটি মুক্তিযোদ্ধা রিক্সা-ভ্যান মালিক কল্যাণ সোসাইটি নামের একটি সমিতির। উক্ত সমিতির মগবাজার এর কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিকশার ওই নম্বরটি মোহাম্মদপুরের নবীনগরের তোফাজ্জল নামে একজনকে দেওয়া হয়েছে। এরপর খুঁজে বের করা হয় তোফাজ্জলকে। কিন্তু “তোফাজ্জল বিশেষ কোন সহায়তা করতে না পারায়, পুলিশ বিভিন্ন রিকশার গ্যারেজে খোঁজ নিতে শুরু করে।

২৫ অগাস্ট নবীনগরের একটি গ্যারেজ থেকে খবর আসে, তাদের এক চালক রিকশাসহ নিখোঁজ। ওই গ্যারেজে গিয়ে রিকশার ছবি দেখালে রিকশামালিক চিনতে পারেন এবং রিকশা কাকে দিয়েছে,তা জানান। সেই অনুযায়ী রিকশাচালকের বাসায় গিয়ে স্ত্রী পূর্ণিমাকে লাশের ছবি দেখালে পরনের কাপড় দেখে তিনি নিজের স্বামীকে সনাক্ত করতে পারেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নিহতের পরিচয় সনাক্তকরনের পরপর‍্ই খুনি এবং হত্যাকাণ্ডের কারণ বের করার জন্য তৎপর হয় পুলিশ। এসআই নয়ন মিয়া রিকশাচালকদের থেকে পূর্ণিমার দুশ্চরিত্র সম্পর্কে অবগত হন। তখন তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে পূর্ণিমার মোবাইল ফোন নম্বর ধরে অনুসন্ধান চালান এবং একটি নম্বরে পূর্ণিমার দীর্ঘসময় কথা বলার প্রমাণ পেয়ে সন্দেহভাজকভাবে তোতা এবং পূর্ণিমাকে ১ সেপ্টেম্বর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তোতা মিয়া পূর্ণিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও হত্যার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

পরদিন ২ সেপ্টেম্বর পূর্ণিমা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন এবং পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন।

পূর্ণিমা জানান, তোতা মিয়ার সাথে শালিস করার কথা বলে একটি নিরিবিলি জায়গায় ডেকে নিয়ে যায় স্বামীকে। সেখানে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী কথা বলার ফাঁকে স্বামীর অণ্ডকোষ টিপে ধরে সে। লাল বাবু জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এতে। তখন সে লাল বাবুর পা চেপে ধরে এবং তোতা মিয়া গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

তবে ৫ দিন রিমান্ডে থাকার পর ৭ সেপ্টেম্বর তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন যে তিনি গলায় গামছা সে পেঁচিয়ে ধরেনি, গামছা পেঁচিয়ে ধরেছে পূর্ণিমা। তবে সে পা চেপে ধরেছিল।

Bootstrap Image Preview