Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইদে বিশেষ বরাদ্দে চাল পায়নি নান্দাইলের ৫৫ হাজার মানুষ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০১৮, ০২:৫৯ PM
আপডেট: ১২ আগস্ট ২০১৮, ০২:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


রমজান আলী, নান্দাইল প্রতিনিধি:

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দুস্থ সংখ্যা ৭২ হাজার ৪১১। ঈদে মাথাপিছু ভিজিএফের (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) চাল বরাদ্দ ১০ কেজি (মোট বরাদ্দ ৭২৪.১১০ টন)। কিন্তু প্রায় ৫৫ হাজার দুস্থ এই ঈদ বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা বলছেন, কেউ বঞ্চিত থাকবে না।

 

সূত্র জানায়, প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দ বিতরণের দাবি করা হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ে বরাদ্দ উত্তোলন না করায় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের জন্ম নিচ্ছে। দুস্থরা প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘোরাফেরা করলেও কবে দেওয়া হবে চাল, সে কথা কারো কাছ থেকে জানতে পারেনি। ফলে খালি হাতেই ফিরে যাচ্ছে তারা।

নান্দাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগে ইউপি গুলো থেকে দুস্থদের তালিকা জমা দেওয়ার কথা উপজেলা পিআইও কার্যালয়ে। কিন্তু দুস্থদের তালিকা যথাসময়ে জমা দেয়নি বেশির ভাগ ইউপি চেয়ারম্যান।

কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকার দলীয় কিছু নেতার হস্তক্ষেপের কারণে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক তালিকা প্রণয়ণ করা যায়নি।

মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তিনি যথাসময়ে তালিকা জমা দিয়ে চাল বরাদ্দের ছাড়পত্র নিয়েছেন এবং ঈদের আগে বেশির ভাগ বিতরণ করা হয়ে গেছে। বাকি চাল গত বৃহস্পতিবার বিতরণ করেন।

চন্ডিপাশা ইউপি সদস্য মো. আবদুল কাদির অভিযোগ করেন, তার ইউনিয়নের ঈদের ভিজিএফের চাল স্বচ্ছভাবে বিতরণ করা হয়নি। সাতজন ইউপি সদস্যকে বাইরে রেখে ইউপি চেয়ারম্যান মো. এমদাদুল হক ভূঁইয়া তার বাড়ির কাছে লোকজন জড়ো করে কিছু চাল বিতরণ করেছেন। ইউপি সদস্যরা কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি।

অভিযোগের উত্তরে চেয়ারম্যান এমদাদুল হক ভূইঁয়া বলেন, সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাঁশহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙিনায় সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে।

নান্দাইল ইউপি’র চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হক বলেন, প্রথম পর্যায়ের ভিজিএফের চাল তিনি বিতরণ করেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ের বরাদ্দ এখনো উত্তোলন করেননি।

শেরপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব উদ্দিন ম-ল বলেন, বরাদ্দের চাল উত্তোলন করার পর বিতরণ করবেন।

খারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত বলেন, তিনি গাজীপুরে এক আত্মীয়র নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এলাকায় এসেই চাল উত্তোলনের ব্যবস্থা করবেন। উপজেলা পিআইও এ বি এম সিরাজুল হক বলেন, ১২টির মধ্যে ৯টি ইউনিয়নের ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কোনো প্রতিবেদন তার কার্যালয়ে জমা পড়েনি। তিনটি ইউনিয়নে চাল বিতরণ শেষ করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে কিছু চাল ব্যবসায়ীকে ইউপি চেয়ারম্যানদের পিছে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। লোকজন ধারণা করছে, কিছু চাল লোক-দেখানোভাবে বিতরণ করে বাকিটা কালোবাজারে বিক্রির পাঁয়তারা চলছে। ভিজিএফ চাল বরাদ্দ ঈদের সময় বিতরণ না করার কারণ জানতে চাইলে নান্দাইলের ইউএনওর দায়িত্ব পালনকারী

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা আক্তার বলেন, প্রথমত যথাসময়ে তালিকা প্রস্তুত না করা, দ্বিতীয়ত নান্দাইলের খাদ্যগুদামে পর্যাপ্ত চাল না থাকায় পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা থেকে বরাদ্দ উত্তোলনে অনীহা দায়ী। তবে সব কিছু বাদ দিয়ে মাঠে নামা হচ্ছে, যাতে দ্বিতীয় পর্যায়ের বরাদ্দ যথাযথভাবে বিতরণ করা হয়।

Bootstrap Image Preview