Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

এক আংটি কেড়ে নিলো পরিবারের সুখ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩০ PM
আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১১ PM

bdmorning Image Preview


একটি আংটির কারণে প্রাণ গেল আল-আমিন নামে প্রবাসী এক যুবকের। মা হারালেন তার ছেলেকে, আর নববধূ হারাল স্বামী।

ভৈরবের শিবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার পুত্র আল-আমিন। বাবা পেশায় একজন পিকআপ চালক। দুই ভাই দুই বোন আর মা-বাবাকে নিয়ে ছয় সদস্যের পরিবার তারা।

২০ ডিসেম্বর শুক্রবার আল-আমিনের সঙ্গে একই এলাকার কৃষ্ণনগর গ্রামের ফুল মিয়া মেম্বারের মেয়ে মারুফা বেগমের বিয়ে সম্পন্ন হয়। মাত্র ৪ দিন সংসার করে মায়ের সঙ্গে রাগ করে মঙ্গলবার স্ত্রীর ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আল-আমিন।

শ্বশুরবাড়ি থেকে একটি স্বর্ণের আংটি না দেয়ায় নববধূ মারুফা বেগমকে তার শাশুড়ি কটুকথা, বকাঝকাসহ লজ্জা দিত। আল - আমিন তার মাকে বার বার বুঝিয়েও শান্ত করতে পারছিলেন না।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আল-আমিন কুয়েত প্রবাসী। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে আল-আমিন ও মারুফা বেগমের বিয়ে সম্পন্ন হয়। গত ১০ দিন আগে আল-আমিন কুয়েত থেকে দেশে আসেন। আত্মহত্যার পর তার লাশ পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।

বুধবার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সকালে তার নামাজে জানাজার পর স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান আল-আমিন (২৬) পরিবারের সুখ আনতে গত ৮ বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমায়। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর তার পরিবারে কিছুটা সচ্ছলতা ফিরে আসে। প্রবাসে থেকে গতবছর ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় এলাকার মারুফা বেগমের (১৯) সঙ্গে। তারপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

গত ১৪ ডিসেম্বর কুয়েত থেকে দেশে এসে মা-বাবাকে প্রেমের বিষয়টি জানায়। তারপর মারুফার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ২০ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয়।

কিন্তু গ্রামের প্রথা অনুযায়ী জামাইকে স্বর্ণের আংটি দিতে হয়। মারুফার দরিদ্র পিতা-মাতা জামাইকে টাকার অভাবে আংটি দিতে পারেনি। নতুন বউ নিয়ে বাড়ী গেলে আল-আমিনের মা মর্জিনা বেগম জানতে পারে ছেলেকে আংটি না দিয়ে নগদ ১৫০০ টাকা দিয়েছে। এতেই বিপত্তি বাঁধে মায়ের।

মা নতুন বউকে কটুকথা ও লজ্জা দেয়াসহ বকাঝকা করতে থাকে। এভাবে তিনদিন চলে যায়। ছেলে মাকে বুঝিয়েও কটু কথা থেকে শান্ত করতে পারছিল না। এ রাগে পরদিন মঙ্গলবার সকালে নববধূর ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আল-আমিন।

স্বামীর এমন মৃত্যুতে হতবাক মারুফা বলেন, বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি আংটির জন্য আমাকে কটুকথা, লজ্জা দেয়াসহ বকাঝকা করেছেন। তিনি সারাক্ষণ আমাকে গালিগালাজ করতেন। আমার স্বামী বলেছিল গোপনে একটি আংটি কিনে আমার মাকে দিয়ে তাকে দিবে। যাতে আর কটুকথা না বলে। কিন্তু এর আগেই সে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল। আমি স্বামীর ঘটনার বিচার চাই। তার মায়ের কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে।

ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় আল-আমিনের পরিবার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। আংটির বিষয়টি পুলিশ বলতে পারবে না। তবে তার স্ত্রী এমন অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview