অনেক নাটকের পর সেঞ্চুরিটা পেলেন, বঙ্গবন্ধু বিপিএলের দ্বিতীয়। শতকটা বৃথাই গেল ডেভিড মালানের। একা টেনে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ১৭০ রান এনে দিয়েছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে সে লক্ষ্যকে পাত্তাই দেয়নি রাজশাহী রয়্যালস। হেসেখেলেই তুলেছে জয়।
মঙ্গলবার কুমিল্লার ইনিংসের পুরোটা মালানময়। শুরু থেকে শেষ, একাই নিঃসঙ্গ যোদ্ধার লড়াই চালিয়ে গেলেন তিনি। সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকারের মতো তারকা ব্যাটসম্যান থাকার পরও তেমন সঙ্গ পাননি।
সৌম্যকে নিচে ঠেলে ভানুকা রাজাপাক্সের সঙ্গে ওপেনিং করতে নেমেছিলেন মালান। লঙ্কান ওপেনার বেশিক্ষণ টিকতে পারননি। আউট তৃতীয় ওভারেই। সেই পথে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ফিরে যান সাব্বিরও।
ওপেনিংয়ে জায়গা হারানো সৌম্য নামেন চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে। অন্য সবার থেকে কেবল তিনিই পেরেছেন মালানকে যা একটু সঙ্গ দিতে। তাতে তৃতীয় উইকেটে আসে ঠিক ৫০ রান, যেখানে সৌম্যর অবদান ২০।
সৌম্য ফেরার পর মাত্র ১১ রান করে অধিনায়ক দাসুন শানাকা ফিরে গেলে মড়ক লাগে কুমিল্লার একপ্রান্তে। মিডলঅর্ডার থেকে লোয়ার অর্ডার, ব্যাটসম্যানরা এলেন আর গেলেন। এরপরও কুমিল্লা বড় সংগ্রহে কৃতিত্ব কেবল মালানেরই।
সৌম্য থাকতেই ফিফটি পেয়েছিলেন, মালান সেঞ্চুরি পেতে পারতেন আরও আগে। অপরপ্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া আর বল মিসের মহড়ায় সেটা গিয়ে ঠেকে একদম শেষ ওভারে। একটা সময় মনে হচ্ছিলো সেঞ্চুরি না পেয়েই থামতে হবে তাকে। ১৯তম ওভারে মোহাম্মদ ইরফান টানা দুই উইকেট তুলে নেয়ার পর স্ট্রাইক না নিতে পারার হতাশা স্পষ্ট চোখে ভাসছিল তার। দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে নামা মুজিব-উর-রহমান কোনো রান না নেয়ায় শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান মালান, তখন তার রান ৯২।
আন্দ্রে রাসেলের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৯৮ রানে পৌঁছান মালান। পরের বলে এক রান তুলে স্ট্রাইক দেন মুজিবকে। তৃতীয় বলে মুজিব রান নিতে না পারায় আবারও নাটক। চতুর্থ বলে কোনরকমে রান নিয়ে মালানকে স্ট্রাইকে পাঠান আফগান স্পিনার। রাসেল পরের বলটা ওয়াইড দেয়ায় খানিকটা শঙ্কা। তবে তার পরের বলে এক রান তুলে কাঙ্ক্ষিত শতকের দেখা পান মালান।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের দ্বিতীয় শতক তুলতে ৫৪টি বল খেলেছেন মালান। ৫ ছক্কার সঙ্গে ৯ চারের মার তাতে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই মূলত বড় পথের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা।
নিজ দলের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে যা পাননি মালান সেটা আবার পেয়েছেন আফিফ হোসেন। প্রথমে লিটন দাসের সঙ্গে ঝড়ো ৬০ আর তৃতীয় উইকেটে রবি বোপারার সঙ্গে আফিফের ৬২ রানের জুটিতেই জয়ের পথ পেয়ে যায় রাজশাহী।
৮ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ বলে ৭৬ করার পর আল-আমিন হোসেনের শর্ট বলে মালানের হাতে ধরা পড়েন আফিফ। তাতেও খুব একটা ক্ষতি হয়নি রাজশাহীর। রবি বোপারার ৪০ আর অধিনায়ক রাসেলের ১১ রান, ১৩ বল আগেই ম্যাচ জিতে নেয় রয়্যালসরা।