Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিগারেটের কাগজে লেখা নম্বর দিয়ে স্কুলছাত্রের খুনিকে ধরল এলিটফোর্স

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৫ PM
আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৬ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


গত ৫ ডিসেম্বর স্কুলছাত্র সাদমান ইকবাল রাকিনকে অপহরণের পাঁচদিন পর তার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। দিশেহারা বাবা ৭ ডিসেম্বর থানায় মামলা করেন।এরপর তদন্তে নামে র‍্যাব। শিশু সাদমানকে অপহরণের পর একটি নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। সেই নম্বরটিতে দ্রত ফ্লেক্সিলোড করতে সিগারেটের ছোট কাগজে নম্বরটি লিখে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন খুনিরা। 

একপর্যায়ে ওই চিরকুটটি আসে র‍্যাবের হাতে। শুরু হয় অনুসন্ধান। অবশেষে হাতের লেখা মিলিয়ে খুনিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে এলিটফোর্স র‍্যাব। অপরাধ করে পালিয়ে যাবার সময় কোনো না কোনো সূত্র বা প্রমাণ রেখে যান অপরাধী। এমন কথা প্রচলিত প্রবাদ এবার প্রমাণ হলো।

এ মামলায় রবিবার (১৬ ডিসেম্বর) পারভেজ ও ফয়সাল নামের দুজনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এ হত্যাকাণ্ডের কাহিনী তুলে ধরেছে, র‍্যাব- ১।

গ্রেফতার দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাব জানাতে পেরেছে, শিশু সাদমানের খুনি গৃহশিক্ষক পারভেজ শিকদার। পারিবারিক অসচ্ছলতা দূর করতে নিজ ছাত্র সাদমান ইকবাল রাকিনকে অপহরণ করেন পারভেজ।

সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনা জানান র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

তিনি জানান, অপহরণের ঘটনাটি ঘটে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ফাউগান গ্রামে। এ গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ শামীম ইকবালের ছেলে সাদমান ইকবাল রাকিনকে অপহরণ করা হয়। পাঁচদিন পর তার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায় গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার শিশুটির নিজ বাড়ির বাঁশঝাড়ে। গত ৭ ডিসেম্বর শিশুর বাবা সৈয়দ শামীম ইকবাল শ্রীপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মামলায় তদন্ত শুরু করে র‍্যাব।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে সাদমানকে প্রাইভেট পড়াতেন পারভেজ। বড় অঙ্কের টাকা প্রাপ্তির আশায় ছয় মাস আগে এই অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে সাদমানের বাবার মোবাইল ফোন চুরি করেন তিনি। পরে বিভিন্ন অপরাধ বিষয়ক সিনেমা-নাটক বিশেষত ক্রাইম পেট্রোল দেখে তিনি এই অপহরণের পরিকল্পনা করতে থাকেন।

লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম আরও বলেন, পারভেজ পরিকল্পনা করে যে ভিকটিমের বাবার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে অপহরণের পর তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে খুব সহজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দেয়া যাবে। এমনকি মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস থেকে ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় গত ৬ মাস থেকে তিনি মোবাইলটি বন্ধ রেখেছিলেন এবং অন্য কোথাও কল করেননি।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গত ৫ ডিসেম্বর বিকেল বেলায় সাদমানকে গোপনে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যান পারভেজ ও ফয়সাল। জঙ্গলের ভেতর সাদমানকে আটকাতে ব্যর্থ হন তারা। কিন্তু সে ছাড়া পেয়ে গেলে তাদের কথা সবাইকে জানিয়ে দেবে, এই ভয়ে ফয়সাল ও পারভেজ মিলে সাদমানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

গ্রেফতারের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য ফয়সাল ওই ফোন নম্বরে একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে ২০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করে। সেই তথ্যটি আমাদের কাছে চলে আসে। পরে ওই দোকানে গিয়ে দোকানের ময়লা রাখার ঝুড়িতে সিগারেটের কাগজের একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যেটিতে ফয়সাল ওই মোবাইল ফোন নম্বর লিখে এনেছিলেন। পরে সাদমানের বাবার সঙ্গে কথা বলে আমরা পাঁচ-ছয়জনের একটি লিস্ট তৈরি করি, তাদের হাতের লেখা চিরকুটের লিখার সঙ্গে মেলানোর জন্য। পরে ফয়সালের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তাকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে গ্রেফতার করা হয় পারভেজকে।

Bootstrap Image Preview