Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

একশ টাকার টিকেট হাজার টাকায় বিক্রয়ের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:১৮ PM
আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৩৫ PM

bdmorning Image Preview



একশো টাকার টিকিট এক হাজার টাকা! এমন দাম শুনে কেউ কপালে চোখ উঠিয়েন না। দামের এমন আকাশ পাতাল ফারাক হলেও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের টিকিট নিয়ে চলছে এই ধরনের কালোবাজারি।

সিলেট স্টেডিয়ামের প্রধান গেটের পাশে একটি টিকিট বিক্রির বুথ আছে। সেখানে গতকাল ও আজ এই দুই দিন সকাল নয়টা থেকে বারোটা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা হয়। কাঙ্ক্ষিত সেই টিকেটের জন্য স্টেডিয়ামের পাশে লম্বা লাইন পড়ে যায়। এই রকম দীর্ঘ লাইন ও দর্শকের ভিড় দেখলে যে কেউ মনে করবে কি শান্তিতে দর্শকরা টিকি কিনতে পারছেন।

কিন্তু মোটেও তা নয়। এই দীর্ঘ লাইনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেও মিলছে না একটি টিকিট। গত দুদিন স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারে  এমন দৃশ্য দেখে জানার খুব আগ্রহ হলো। ক্রিকেটপ্রেমীরা ঠিক ঠাক টিকিট পাচ্ছেন কি না? 

তাঁর পর ঘুরে ঘুরে যা দেখলাম তা সত্যিই চোখ কপালে উঠার মত! টিকিট কাউন্টারের এক পাশের নারী ও অন্যপাশে পুরুষের লাইন। টিকিট ক্রয়ে পুরুষদের থেকে নারীদের বেশি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কারণ নারীদের লাইনটা খুব ছোট আর তাঁরা টিকিট ও ক্রয় করতে পারছেন ইচ্ছা মত। কারণ ছোট লাইনে একটি টিকিট ক্রয় করে আবার ঘুরে এসে লাইনে দাড়াচ্ছেন। এই ভাবেই তাঁরা একাধিক টিকিট ক্রয় করছেন।

নারীদের এই ইচ্ছা মত টিকিট ক্রয়ে ঘটছে যত বিপত্তি। কারণ তাদের দিয়ে কিছু অসাধু লোখ একাধিক টিকিট ক্রয় করে  করছে কালোবাজারির ব্যবসা। শুধু পুরুষরাই নয়, টিকিট কালোবাজারির ব্যবসা করছেন নারীরাও।  

নারীদের লাইনে দেখতে পেলাম একজন বৃদ্ধাকে বয়স ৭০ বছরের কাছা কাছি।টিকিট ক্রয়ের জন্য রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। এমন টাইগার ক্রিকেটপ্রেমী দেখতে পাওয়া বিরল।তাই জানার কৌতুহলটা বেশ নড়ে বসলো। তাই চাচী বলে জানতে চাইলাম বাংলাদেশের খেলা আপনার কেমন লাগে? জবাবে তিনি জানালেন খেলা দেখি না। এরপর জানতে চাইলাম বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে কার খেলা আপনার ভালো লাগে?সেই জবাবটা আরো ভয়ংকর ভাবে দিলেন তিনি, বললেন কাউকে চিনি না। সেই চাচীর এক ছেলে। সেই ছেলের আবার চারটি বাচ্চা আছে। তিনি একমাত্র ছেলের খেলা দেখার  জন্য  টিকিট কিন তে এসেছেন। কিন্তু চাচীর কথা বার্তায় বুঝা গেলো তাকে দিয়ে টিকিটের ব্যবসা করানো হচ্ছে। বিষয়টা কি অদ্ভুত তাই না? 

যাই হোক চাচীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেখলাম কিছু প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে বোরকা পরে লাগামহীন দামে টিকিট বিক্রি করছেন। জানতে চাইলাম এই ভাবে কেন টিকিট বিক্রি করছেন? উত্তরটা সোজা সাপটা দিয়ে দিলেন, কই না তো।' কিন্তু কিছুক্ষণ আগেই আমার সামনে তিন থেকে চারটা টিকিট তাঁরা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করেছেন।

এরপর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রের অভিযোগের তো শেষ নেই। তাঁর ভাষ্যে, টিকিট বিক্রয়ের কোন নিয়মি ঠিক নেই, লাইনের টিক নেই, নিরাপত্তার কর্মীদের নিয়মের ঠিক নেই, কালোবাজারিরা একশো টাকার টিকিট চাই এক হাজার, পাঁচশো টাকার টিকিট চাই দুহাজার।আবার টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভাংটি টাকা না দিলে বাকি টাকা নাকি ফেরতি দেয় না টিকি কাউন্টার থেকে। কি  অদ্ভুত সব নিয়মকানুন।

যাই হোক টিকিট কাউন্টারের আর কালোবাজারির এই রমরমার ব্যবসায় দিশেহারা হয়েও ভালোবাসার সাকিব ও তামিমদের এক পলক কাছ থেকে দেখার জন্য মাঠে ছুটে আসেন হাজারো ক্রিকেটপ্রেমী। তাই টিকিট বিক্রয়ের ক্ষেতে কতৃপক্ষ আরো একটু সুনজর দিলে ভক্তদের এমন প্রতারণার শিকার হতে হয় না।

Bootstrap Image Preview