গুণী নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, চিত্রনাট্যকার আমজাদ হোসেনের আমজাদ হোসেনের মৃত্যুর খবর শুনে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা ববিতা। অঝোরে কাঁদলেন গোলাপী চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পাওয়া এ অভিনেত্রী।
কান্নারত কণ্ঠে ববিতা বলেন, আমজাদ ভাইয়ের সাথে অনেক স্মৃতি আছে। তার মৃত্যু সংবাদ খুবই দুঃখের। তার মতো এমন জিনিয়াস মানুষ আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি। উনার অনেক ছবিতে অভিনয় করেছি। তার পরিচালিত আমার অনেকগুলো সিনেমা জনপ্রিয়। তার আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করি।’
গত ১৮ নভেম্বর আমজাদ হোসেন ব্রেন স্ট্রোক করলে তাকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বেশ কিছুদিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
এরপর তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত চিকিৎসার খরচ বাবদ নন্দিত এই নির্মাতার পরিবারের হাতে ২০ লাখ টাকা এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বাবদ ২২ লাখ টাকা দেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর ২৭ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’খ্যাত পরিচালককে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এরপর আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন এই নির্মাতা। ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে প্রায় ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন এই কিংবদন্তি এই নির্মাতা।
প্রসঙ্গত, আমজাদ হোসেন একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, গল্পকার, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত। তার জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট, জামালপুরে। দীর্ঘ বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ‘ভাত দে’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’র মতো কালজয়ী অনেক সিনেমা নির্মাণ করেছেন।
‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।