এক বছরে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দুইটি সিরিজ জয়ের লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৯ উইকেটে ১৯৮ রান করেছে উইন্ডিজ। জয়ের জন্য টাইগারদের ১৯৯ রান দরকার।
সিলেটের ওয়ানডে অভিষেক সেই সাথে সিরিজ জয়ের লড়াই। তাই টসে জিতে ফিল্ডিং নেন টাইগার দলপতি। ফিল্ডিংয়ের সিন্ধান্তটা বিফলে যায়নি মাশরাফির। সাকিব, মিরাজ , সাইফউদ্দিন সবাই যেন আগুন ঝরিয়েছেন বলে। থেমে ছিলেন না ম্যাশ নিজেও।
উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ধ্বংস হতে থাকে তাদের ব্যাটিং লাইন আপ। টাইগার বোলারদের বোলিং তপে অসহায়ের মত ব্যাট চালাতে থাকে। ব্যাটিং বিপর্যয় ও ধীর গতির এই খেলায় নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে উইন্ডিজের স্কোর দাঁড়ায়.৯ উইকেটে ১৯৮ রান।
টাইগারদের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ মিরাজ(৪), সাকিব(২), মাশরাফি(২), সাইফউদ্দিন(১)।
উইন্ডিজের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ চন্দরপল হেমরাজ(৯), শাই হোপ(১০৮)*, ড্যারেন ব্রাভো(১০), মারলন স্যামুয়েলস(১৯), শিমরন হেটমায়ার(০), রস্টন চেজ(৮), রোভম্যান পাওয়েল(১), কেমার রোচ (৩) অ্যালেন(৬)ও বিষু(৫)*।
মিরাজ ও সাইফউদ্দিনের পর উইকেট ভাঙলেন মাশরাফিঃ সিরিজ জয়ের লড়াইয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের শেষ করতে যেন উঠে পড়ে লেগেছে টাইগার বোলাররা। ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটিয়ে একে বারে কোন ঠাসা করে ফেলেছে তাদের। খেলার শেষের দিকে ৪৩ ওভার ৫ বলে পলের উইকেট উড়িয়ে দেন ক্যাপ্টেন ম্যাশ।
সাকিবের বলে মিথুনের দুর্দান্ত ক্যাচঃ টাইগার বোলারদের বোলিং তাণ্ডবে শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। কোন ভাবেই ব্যাটিং বিপর্যয়ের সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে পারে না তাঁরা। একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসতে থাকে। খেলার ৩৮ ওভারের মাথায় সাকিবের বলে অ্যালেনের দুর্দান্ত ক্যাচ ধরের মিথুন। এই সময় ক্যারিবিয়ানদের স্কোর ছিলো ৭ উইকেটে ১৪৩ রান ৩৮ ওভার।
সাকিবের প্রথম উইকেটঃ দলের সব ব্যাটসম্যারা যখন টাইগার বোলারদের সামনে ব্যাট হাতে ব্যর্থ তখন এক পাশ থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন উইকেটে থাকা হোপ। কিন্তু বড় সংগ্রহের জন্য দীর্ঘ সময় কোন সঙ্গী বানাতে পারছেন না। খেলার ৩৩ ওভারের সময় সাকিবের বলে বড় শর্ট খেলতে গিয়ে ডিপ অনে সৌম্যর কাছে ক্যাচ আউট হন চেস। চেসকে হারানোর পর হোপ আরো একা হয়ে যান। এই সময় ক্যারিবিয়ানদের স্কোর ছিলো ৩৩ ওভারে ১৩৩ রান ৬ উইকেট।
তৃতীয় উইকেট নিলেন মিরাজঃ বোলিংয়ের শুরু থেকেই দাপট দেখাচ্ছেন মিরাজ। জাদুকরী ঘূর্ণিতে একের পর এক বন্দি করে চলেছেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। কোন ভাবেই মিরাজের এই ঘূর্ণিকে প্রতিহত করে উইকেটে দাঁড়াতে পারছেন না উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। স্যামুয়েলসের বিদায়ের পর শক্তিশালি ব্যাটসম্যান হেটমায়ারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলান। এই নিয়ে হেটমায়ারকে ৬ বার আউট করলেন মিরাজ। হেটমায়ারের বিদায় হতে না হতেই পরের ওভারে পাওয়েলকে ক্যাচ আউট করে ক্যারিবিয়ান শিবিরে যেন ধ্বস নামিয়ে দেন তিনি। এই সময় ক্যারিবিয়ানদের স্কোর ছিলো ২৫ ওভার ৫ উইকেট ৯৯ রান।
মিরাজের পর উইকেট ভাঙলেন সাইফউদ্দিনঃ বড় কোন জুটি বাঁধার আগে দুই উইকেট হারিয়ে একটু ভাপে পড়ে যায় ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু উইকেটে থাকা হোপ সেই চাপ কাটিয়ে স্যামুয়েলসকে নিয়ে আবারো জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। দুই ব্যাটসম্যান মিলে ৪১ রানের জুটি গড়েন। এরপর ২২ ওভারের শেষের দিকে সাইফউদ্দিন স্যাময়েলসের উইকেট উড়িয়ে দিন।ভেঙে যায় তাদের সেই জুটি। এই সময় উইন্ডিজের উইকেট ছিলো ২২ ওভার ২ বলে ৩ উইকেটে ৯৬ রান।
ব্রাভোর উইকেট ভাঙলেন মিরাজঃ প্রথম উইকেট হারানোর পর গত ম্যাচের হিরোপ হোপ আবারো বড় জুড়ি গড়ার লক্ষে ব্রাভোকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু তাদের সেই জুটি বেশি দীর্ঘ হতে দেননি ঘূর্ণি মিরাজ। খেলার ১৩ ওভার ৪ বলের মাথায় ব্রাভোকে বোল্ড আউট করে পাঠিয়ে দেন সাজ ঘরে। এই সময় উইন্ডিজের উইকেট ছিলো ২ উইকেটে ৫৭ রান ১৩ ওভার ৪ বলে।
মিরাজের আঘাতঃ সিরিজ জয়ের এই ম্যাচে ক্যাপ্টেন ম্যাশ একটু ভিন্ন ভাবে বোলিং সাজান। একদিক দিয়ে মোস্তাফিজ ও অন্যদিক দিয়ে মিরাজকে। দুই দিক দিয়েই এই দুই বোলার টাইট বল করতে থাকেন। এরপর খেলার ৪ ওভারের মাথায় হেমরাজকে মিরাজ ক্যাচ আউটের ফাঁদে ফেলান। এই সময় ক্যারিবিয়ানদের স্কোর ছিলো ৩.৫ বলে ১৫ রান ১ উইকেট।
টাইগার একাদশে আজ দুটি পরিবর্তন এসেছে। রুবেল হোসেনের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও ইমরুল কায়েসের পরিবর্তে মোহাম্মদ মিথুন। অন্যদিকে উইন্ডিজ একাদশে কোন পরিবর্তন হয়নি।
টাইগার একাদশঃ তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম,মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ,সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিথুন, মোস্তাফিজুর রহমান,মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা(অধিনায়ক)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশঃচন্দরপল হেমরাজ, শাই হোপ, ড্যারেন ব্রাভো, মারলন স্যামুয়েলস, শিমরন হেটমায়ার, রস্টন চেজ, রোভম্যান পাওয়েল, দেব্রেন্দ্র বিশু, কেমু পল, কেমার রোচ ও ওশানে থমাস।