অর্থের বিনিময়ে দুই নারীর মুখ বন্ধ করার ফাঁস করে দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন নিউইয়র্কের আদালত।
কোহেনকে বিরুদ্ধে দুটি মামলায় একাধিক অভিযোগে এ রায় দেওয়া হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অর্থের বিনিময়ে দুই নারীর মুখ বন্ধ করা, রাশিয়ায় প্রস্তাবিত ট্রাম্প টাওয়ার প্রজেক্টের ব্যাপারে মিথ্যা সাক্ষ্য এবং কর ফাঁকি দেওয়া। এর সবগুলোতেই দোষ স্বীকার করেছেন মাইকেল কোহেন।
এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো রুশ সংযোগের দায়ে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে কাউকে কারাদণ্ড দেওয়া হলো। নিউইয়র্ক আদালতে নিজের সব অপকর্মের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করেন মাইকেল কোহেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো তিনি ট্রাম্পের নির্দেশেই করেছেন বলে দাবি করেন কোহেন।
অন্যদিকে নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের মামলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস ও সাবেক প্লেবয় মডেল কারেন ম্যাকডোগালকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এভাবে ঘুষ দিয়ে কারো মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা বেআইনি।
মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তকারী বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলারের মামলায় কোহেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে সম্ভাব্য ট্রাম্প টাওয়ার প্রজেক্ট নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের শুনানিতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
গত বুধবার নিজের বিরুদ্ধে আনা এ সংক্রান্ত অভিযোগ স্বীকার করে কোহেন। ওই ভবনটি অবশ্য শেষ পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়নি।
মাইকেল কোহেন প্রায় এক দশক ধরে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্পের প্রতি কোহেনের সমর্থন এতটা প্রবল ছিলো, তিনি জনসম্মুখে বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনে তিনি গুলির সামনে বুক পেতে দেবেন।’ তবে বুধবার আদালতের রায়ে সাজা পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় নিজের সব অপকর্মের জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করেন তার সাবেক এই আইনজীবী।