Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য দৃষ্টিনন্দন বাঁশের তৈরি বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু

এম. সালাহ উদ্দিন আকাশ, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:৩১ PM
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:৩১ PM

bdmorning Image Preview


ছবির মত সুন্দর একটি স্থাপনা। বাঁশ, কাঠ এবং ছন এর মত দেশিয় পণ্যে নির্মিত এর ছাউনি। দেখতে গোলাকার, ভেতরে আলো বাতাসের প্রাচুর্য্য রয়েছে। এর বাহ্যিক সৌন্দর্য্য পথচারীদের নজর কাড়ছে প্রতিনিয়ত। শিশুরা চারপাশে হাসিমুখে স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে, শিক্ষনীয় নানা কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। এটি ফ্রেন্ডশিপ পরিচালিত একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা যা ইউনিসেফ এর পৃষ্ঠপোষকতায় “বাংলাদেশে অবস্থানরত বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার জনগোষ্ঠীর প্রাক এবং অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম” এর অধীনে নির্মিত একটি লার্নিং সেন্টার।

রবিবার (৯ ডিসেম্বর) ফ্রেন্ডশিপ তাদের প্রথম ক্লাস্টার আকারে নির্মিত লার্নিং সেন্টারের উদ্বোধন করেছে। কক্সবাজার  জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭ এ বিদ্যালয়টির অবস্থান। এটির উদ্বোধন করেন, ক্যাম্প ৭ এর ইনচার্জ জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, কক্সবাজারস্থ ইউনিসেফের ভারপ্রপ্ত ইনচার্জ রবাট হ্যানাওয়াল্ড। এছাড়াও ক্যাম্পের অন্যান্য ক্যাম্প ইনচার্জগণ অনুষ্ঠানে বক্তব্যরাখেন।

এ প্রসঙ্গে ফ্রেন্ডশিপের এডুকেশন বিভাগের পরিচালক ও প্রধান ব্রিঃ জেঃ (অবঃ) ইলিয়াস ইফতেখার রসূল বলেন, তারা ১৩টি স্থানে ক্লাস্টার হিসেবে এরকম সর্বমোট ৫২টি লার্নিং সেন্টার নির্মাণের কাজ করছেন। ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের বিদ্যমান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা পূরণে ক্লাস্টার ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থায় প্রতিটি স্থানে
একটি ক্লাস্টারের আওতায় চারটি লার্নিং সেন্টার থাকবে। এতে বিদ্যালয়ে জায়গার অপ্রতুলতা যেমন কমবে, তেমনি শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ শিক্ষার স্তর অনুসারে শেখার সুযোগ পাবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে ফ্রেন্ডশিপের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এর পরিচালক ও সিসিএডিএম এর প্রধান কাজী এমদাদুল হক বলেন, ফ্রেন্ডশিপ সর্বদাই শিক্ষাকে অন্যতম গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেছে এবং ভবিষ্যতেও শিক্ষাক্ষেত্রে আরো বেশি কাজ করার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে তিনি সকলের সর্বাত্বক সহযোগীতা কামনা করেন।

পরিশেষে অনুষ্ঠান সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন। সম্প্রতি জয়েন্ট রেসপন্স প্রোগ্রাম (জেআরপি) এর জরীপে উঠে এসেছে যে সর্বমোট ৬১৪,০০০ রোহিঙ্গা শিশু এবং যুবক যাদের বয়স তিন থেকে চব্বিশ বছর তাদের শিক্ষায় জরুরী সহায়তা প্রয়োজন।

সবগুলো ক্যাম্প মিলিয়ে শিক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রায় পাঁচ হাজার শ্রেণীকক্ষের প্রয়োজনীয়তা একই জরীপে উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে 'সেক্টর' প্রায় পাঁচ লাখ চল্লিশ হাজার শিক্ষার্থীর অতিস্তর শিক্ষা-সহায়তার প্রয়োজন পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এদের প্রায় অর্ধেক নারী। ফলশ্রুতিতে পঞ্চাশ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রয়োজনীয় প্রায় নয় হাজার শিক্ষক শিক্ষিকার কথা বিবেচনায় দুই পর্বে এটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) এর অন্যান্য সহযোগী সংস্থার ন্যায় ফ্রেন্ডশিপও এই লক্ষ্য অর্জনে সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছে। 

Bootstrap Image Preview