Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইট ভাটায়, জমি হারাচ্ছে উর্বরতা

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:৩৬ PM
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:৩৬ PM

bdmorning Image Preview


নরসিংদীর বেশির ভাগ ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে জমির উর্বরতা হ্রাস পাওয়াসহ জমি হারিয়ে ফেলছে তার স্বাভাবিক উৎপাদন ক্ষমতা।

জেলার ৭ উপজেলার আবাদি জমি ভাড়া অথবা ক্রয় করে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। আর এসব ইটভাটার জন্য পার্শ্ববর্তী জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। জমির মালিকরা তাদের জমির মাটির গুণাগুণ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অধিক মুনাফা লাভের আশায় ভাটা মালিকদের কাছে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন।

ভাটার মালিকদের ব্যক্তিগত নিয়োগকৃত এজেন্ট বা দালাল এবং এক শ্রেণির ভূমি দস্যু কৃষকদের সাথে ছলচাতুরী করে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করছেন।

কৃষি জমি থেকে এভাবে ইট তৈরির মাটি সংগ্রহ ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য যে পুষ্টির প্রয়োজন তা সাধারণত মাটির উপরিভাগে থাকে। যা উদ্ভিদ বা ফসলের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। কিন্তু জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়ার ফলে জমি থেকে এসব পদার্থ চলে যাচ্ছে ইট ভাটায়। যা ফসলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ।

বেলাবো উপজেলার নারায়নপুর এলাকার কৃষক কফিল উদ্দিন, মোঃ হাসানুজ্জামান, আসাদ মিয়া, মনিরুদ্দিন, মোবারক হোসেন, তারেক চন্দ্র সাহাসহ জেলার অনেক কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিটি ইটভাটায় গড়ে ২২ থেকে ২৮ লাখ ইট তৈরি করতে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি ঘনফুট মাটি ও বালু ব্যবহার করা হয়। 

তাই নাগরিক সমাজের দাবি, ফসলি জমিতে ইট ভাটা তৈরি বন্ধ বা অভিযুক্তদের আইনের আওতায় না এনে সঠিক আইন প্রয়োগ করে দ্রুত এসমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে জেলার কোনো জমিতে ফসল উৎপাদন তো দূরের কথা এ অঞ্চল বিরান ভূমিতে পরিণত হবে।  

ফসলি জমির মাটিকাটার শ্রমিকরা জানান, আমরা ভাড়ায় মাটি কাটি। আড়িয়াল খাঁ নদীর কৃষি জমির মাটি কেটে নিচ্ছি তা যাচ্ছে জে.বি.সি ইটের ভাটায়।

তবে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার সাহা ফসলি জমির মাটি কেটে ইটের ভাটায় নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ইটের ভাটায় ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে না। জমির মালিকরা প্রজেক্ট করলে মাটির সরদারের কাছে মাটি বিক্রি করলে তারা আমাদের ইটের ভাটায় দেন।  

এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আমাদের ফিল্ড অফিসাররা কৃষকদের মাটি বিক্রি থেকে বিরত থাকার জন্য সব সময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ উৎকোচ ও রাজনৈতিক প্রভাবে পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র নিয়ে পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে লাইসেন্স নিয়ে ইটভাটা গড়া হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের ক্ষতি করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর কোনো প্রতিকার করা হচ্ছে না।

Bootstrap Image Preview