তিন পেসার নিয়ে মাঠে নামবেন মাশরাফি সেটা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। টসে হেরে ঠিক তাই করলেন। সঙ্গের সাথী মোস্তাফিজ ও রুবেলকে নিয়ে মাঠে নামলেন।কিন্তু বোলিংয়ের শুরুটা করলেন স্পিন দিয়ে। এই শুরুটা একটু অবাক করার মত ছিলো। কিন্তু তাতে কি সাকিব ও মিরাজ বল হাতে জবাব দিয়েছেন । দুজনে মিলে নিয়েছেন একটি করে উইকেট। অন্যদিকে থেমে ছিলেন না ক্যাপ্টেন ও মুস্তাফিজ আগুন ঝরা বোলিং করে উড়িয়ে দিয়েছেন ক্যারিবিয়ান শিবির। তিনটি তিনটি করে দুজন মিলে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
ফিল্ডিংয়ের শুরুতে টাইগারদের ছিলো ক্যাচ মিসের মিছিল সব মিলিয়ে ৪টি ক্যাচ মিস করেছে তাঁরা। কথায় আছে ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। কিন্তু সেটি এই দিন ভুল প্রামাণ করে দিলো মাশরাফি ও মোস্তাফিজরা। কোন ঠাসা করে দিলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের।
ম্যাচটি মাশরাফির জন্য অনেক স্মরণীয় সেটা আগেই জেনে গিয়েছে ম্যাশ ভক্তরা। তাইতো গ্যালারিতে ছিলো দর্শকে ঠাসা। দেশের হয়ে দুইশোটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ফেললেন ম্যাশ। যা এর আগে কোন টাইগার ক্রিকেটার খেলননি। এমন একটি ম্যাচে তাই বল হাতে দেখা গেলো অন্য মাশরাফিকে । ইনজুরি আক্রন্ত পায়ের গতি যেন এই দিন দ্বিগুণ করে দিলেন। আর হাত দিয়ে ছুঁড়তে থাকলেন এক একটি বম। যে বমে নিমেষেই উড়ে গেল ক্যারিবিয়ান শিবির। ১০ ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে নিয়ে নিলেন ৩ উইকেট।
টাইগার বোলারদের এমন দাপটে মাত্র ১৯৫ রানে গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই কমপুঁজির এই রানের লক্ষে ব্যাটিং করতে লিটনকে নিয়ে ওপেনিং করতে আসেন তামিম।
প্রস্তুতি ম্যাচে খান সাহেব দেখিয়ে দিয়েছেন কতটা আত্মবিশ্বাসী তিনি। সেদিন ক্যারিবিয়ান বোলারদের তুলোধুনা করে করেছিলেন সেঞ্চুরি কিন্তু এই দিন আর সেটি করে দেখাতে পারলেন না।মাত্র ১২ রান করে শেষ করেন নিজের ইনিংস।
খান সাহেবের বিদায়ের পর লিটনকে সঙ্গ দিতে আসেন ইমরুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চরম ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যান এই দিন সেই পারফম্যান্সের সুবিচার করতে পারলেন না। হতাশ করলেন মাত্র ৪ রান করে ইন সাইড বোল্ড আউট হন।
টপ অর্ডারের এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু লিটন ও মুশফিকের ব্যাটিংয়ে সেই চাপ স্বস্তিতে পরিণত হয়। দুই জন মিলে করে ৪৭ রানের জুটি। এরপর লিটন থমাসের বলে ৪১ রানে বোল্ড আউট হলে ভেঙে যায় এই জুটি।
তারপর উইকেটে আসেন সাকিব। মুশফিককে নিয়ে সাকিব দারুণ ছন্দে জয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। রান ও উইকেটের চাপ ছাড়াই স্বস্তিতে ব্যাটিং করতে থাকেন। এরপর পাওয়লের বলে সাকিব ৩০ রান করে ক্যাচ আউট হন। সাকিবের বিদায়ের সময় টাইগারদের দলীয় রান ছিল ১৪৬। তাই খুব একটা চাপে পড়ে হয়নি।
দলের যখন এমন অবস্থা তখন ব্যাটিংয়ে আসেন সৌম্য সরকার। মাত্র ১৩ বল খেলে ১৯ রান করে গ্যালারি গরম করে দিয়ে যান এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান।
উইকেটে থেকে অনেকের সাথে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মুশফিক কিন্তু সেটি দীর্ঘ হয় না। অবশেষে ব্যাটিংয়ে আসেন ভাইরা মাহমুদউল্লাহ। ভাইরাকে সাথে পেয়ে ক্যারিয়ারের ৩১ তম ফিফটি তুলে নেন। এরপর ভাইরাকে নিয়ে ৫ উইকেটের বিরাট জয় তুলেনেন।
টাইগারদের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ব্যাটিং- তামিম(১২) , ইমরুল(৪), লিটন(৪১), সাকিব(৩০), সৌম্য(১৯)
উইকেট নিয়েছেনঃ মাশরাফি (৩), সাকিব (১), মিরাজ(১), রুবেল (১), মোস্তাফিজ(৩)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
পাওয়েল(১০), হোপ(৪৩), ব্রাভো(১৯), স্যামুয়েলস(২৫), হেটমায়ার(৬), চেস(৩২), পাওয়েল(১৪), বিশু(০), পল(৩৬), রোচ(০), থমাস(০)।