Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ত্রিপুরা মহারাজার শতবর্ষী কাচারি বাড়ি

হৃদয় দেবনাথ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫২ AM
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫২ AM

bdmorning Image Preview


অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত ত্রিপুরা মহারাজার কাচারি বাড়ি। সঠিক সংস্কার আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মৌলভীবাজার জেলার অনেক পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক স্থান আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, তার মধ্যে অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন শ্রীমঙ্গল শহরের উপজেলা ভূমি অফিসের সীমানার ভিতর অবস্থিত ত্রিপুরা মহারাজার কাচারি বাড়ি।

ত্রিপুরা মহারাজা ১৮৯৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মোট ১ দশমিক ৬৭ একর জায়গার ওপর নির্মিত শতাধিক বছরের পুরনো একতলা কাচারি বাড়িটি প্রস্থে ৩০ ফুট ও দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট লম্বা, রয়েছে ৩টি কক্ষ, ৮টি দরজা ও ৯টি জানালা। প্রতিটি দেয়াল ১২ ইঞ্চি চওড়া ও চুন-সুরকি দ্বারা নির্মিত। শতবর্ষী এই ভবনটির নিখুঁত কারুকাজ যে কাউকেই আকৃষ্ট করে। এই ভবনটির সামনেই রয়েছে মনোরম শান বাঁধানো ঘাটসহ একটি বিশাল পুকুর।

অবহেলায় পড়ে থাকা এ ঐতিহাসিক ভবনটি টিকে আছে কোনোরকম। ঘরের ছাদের পলেস্তরা ভেঙে ভেঙে পড়ছে, যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পারে পুরো ভবন। দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল, বটবৃক্ষ ও বিভিন্ন লতা গাছ ফাটলের মধ্য দিয়ে নিজেদের জানান দিচ্ছে। ঘরের মেঝেতে আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মূল রঙের ছিটেফোটাও নেই। এই কাচারি বাড়ির পাশ দিয়ে চলা রাস্তায় ধরে হাঁটছেন ভূমি সংক্রান্ত কাজে আসা লোকজন। কেউ কেউ তাকিয়ে দেখছেন পুরোনো আমলের এই ভবনটি।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ঐতিহাসিক এই ভবনটির কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে এর সংস্কার করলে সংরক্ষিত হতে পারে শ্রীমঙ্গলের অন্যতম এই প্রাচীন স্থাপনাটি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ত্রিপুরা মহারাজা কৃষ্ণ মাণিক্য অষ্টাদশ শতকে এই কাচারি বাড়িটিতে বসেই প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন। পরবর্তীতে আধুনিক ত্রিপুরার সূচনালগ্নে মহারাজ মানিক্য বাহাদুর দেববর্মা ঊনবিংশ শতাব্দিতে সমস্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম আগরতলাতে শুরু করেন।

ত্রিপুরা মহারাজার স্মৃতিবিজড়িত ও ঐতিহ্যের প্রতীক এই কাচারি বাড়ি। মহারাজ মানিক্য বাহাদুরের রাজত্বকালে নির্মিত স্বাক্ষী এই শতবর্ষী ভবনটিকে রক্ষা করা হলে তা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিকট আকর্ষনীয় ঐতিহাসিক পর্যটন স্থান হিসেবে গড়ে ওঠবে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক সমাজ।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

 

Bootstrap Image Preview