Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজ মীরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস

মীরসরাই প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৭ PM
আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৭ PM

bdmorning Image Preview


৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনার পর থেকেই মীরসরাইয়ের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন শুরু করে। ৮ ডিসেম্বর সকাল বেলা সুফিয়া রোড ওয়ার্লেস স্টেশন থেকে একটি পাক বাহিনীর জিপ তীব্র গতিতে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎপেতে থেকে শত্রুর অবস্থান নিশ্চিত করে মুক্তিযোদ্ধারা। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে সকল মুক্তিযোদ্ধার কাছে এ খবর পাঠানো হয়।

বেলা প্রায় ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিক থেকে সংগঠিত হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে এক যোগে ঝটিকা আক্রমণ চালায়। শুরু হয় পাক সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে গুলি বিনিময়। পাক সেনাদের অবস্থান ছিল মীরসরাই হাই স্কুল (বর্তমান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়), মীরসরাই থানা, মীরসরাই সিও অফিস। বৃষ্টির মতো গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে মনে হলো পাক সেনাদের পক্ষ থেকে কোন প্রতিরোধ আসছে না। মুক্তিযোদ্ধারা সতর্কভাবে শত্রুর অবস্থানের দিকে গিয়ে দেখলেন পাক সেনারা পালিয়ে যায়।

মুক্তিযোদ্ধারা থানায় প্রবেশ করে পাক সেনাদের আটটি রাইফেল উদ্ধার করে। পাক সেনারা চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে গেছে বলে পরে জানা যায়। চট্টগ্রামের কোন অঞ্চল তখনো মুক্তির স্বাদ পায়নি। মীরসরাই শত্রুমুক্ত হয়েছে-এ কথা বাতাসে দ্রুত ছড়িয়ে যায় মীরসরাইয়ের সর্বত্র। মুহূর্তেই চতুর্দিক থেকে জয় বাংলার শ্লোগানে মীরসরাই সদরে মিছিল আসতে থাকে। অসংখ্য জনতার ঢল নামে মীরসরাই হাই স্কুল মাঠে। মৌলভী শেখ আহম্মদ কবির কোরআন তেলাওয়াত করেন। পরে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ঘোষণা করা হয় আজ ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল মীরসরাই ভূখণ্ড পাক বাহিনীমুক্ত একটি স্বাধীন এলাকা। সে থেকে ৮ ডিসেম্বর মীরসরাইয়ে উদযাপিত হয়ে আসছে স্বাধীনতার শত্রুমুক্ত দিবসটি।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মীরসরাইয়ের রেল স্টেশন সড়কের মাঝামাঝি লোহার পুল নামক স্থানে নরঘাতক পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরেরা অসংখ্য নারী-পুরুষ ও শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে তাদের লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়। ওই সময় এই লোহার পুল এলাকা ছিল ওই এলাকার লোমহর্ষক একটি জায়গার নাম। যার কথা মনে পড়লে এখনো মানুষ আতকে পড়ে উঠে। বর্তমানে ওই লোহার পুল নামক বধ্যভূমি স্থানে জেলা পরিষদের অনুদানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়।

এদিকে দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে র‌্যালি বের হয়ে মীরসরাই উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব রহমান রুহেল, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য ও মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান, মীরসরাই উপজেলার প্যানেল চেয়ারম্যান (২) ইয়াসমিন আক্তার কাকলী সহ মুক্তিযোদ্ধাগণ।  

Bootstrap Image Preview