Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পুকুর টেন্ডার নিতে ভুয়া সেক্রেটারী সাজলেন শিক্ষক !

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৫ PM
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


এবার সরকারি খাস পুকুর পেতে সমিতির ভুয়া সাধারণ সম্পাদক সেজে দরপত্র আহবান করলেন গোদাগাড়ীর আ.ফ.জি পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুজ্জোহা বাবু। একজন শিক্ষকের এমন কাণ্ডে গোদাগাড়ী সদরে চলছে সমালোচনার ঝড়। খাসপুকুর টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে নিজের দুর্বলতা থাকলেও লিজে অংশ গ্রহণকারী অন্যদেরকে ভুয়া আখ্যায়িত করে হুংকার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিনের এক অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।    

জানাযায়, গত ১৫ নভেম্বর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১৪২৫-২৭ তিন বছরের জন্য তৃতীয় দফায়  সরকারি খাস পুকুর লীজ প্রদানের জন্য দরপত্র আহবান করে। এসব সরকারি পুুকুর লীজ পেতে মৎসজীবি ও মৎস্য চাষী সমিতির অংশগ্রহণে সর্বোচ্চ দরদাতাকে পুকুর লীজ প্রদান করা হয়। গত ২৬ নভেম্বর পুকুর লীজের ফলাফল প্রদান করা হয়। এতে উপজেলার সেখপুর মোজার ৯ নং দাগে ২.৩০ পরিমাণের পুকুরটি ১ লাখ ৩০ হাজার বাৎসরিক দরে প্রথম দরদাতা হিসেবে পুকুরটি পাই। দ্বিতীয় দরদাতা ছিলেন সূর্যসেনা মৎস্যজীবি সমিতি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়।  

প্রথম দরদাতার সকল কিছু প্রক্রিয়া ঠিক থাকলেও সূর্যসেনা মৎসজীবির সমিতি দ্বিতীয় দরদাতা হওয়ায় সেই সমিতির আসল সভাপতি মোঃ শামিম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী থাকলেও পুকুর টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে গোদাগাড়ী আ.ফ.জি বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালেয়ে কারিগরির শিক্ষক শামসুজ্জোহা বাবু নিজেই। সেই সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক সেজে সিডিউলে নিজের ছবি ব্যবহার করেছে তবে স্বাক্ষরটি রয়েছে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আশরাফুলের।   সূর্যসেনা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির দ্বিতীয় দরদাতা হওয়ার সুবাদে শিক্ষক সামসুজ্জোহা বাবু প্রথম দরদাতা সমিতি অবিলব্দা মৎস্য চাষী সমবায় সমিতি প্রথম দরদাতা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হয়নি বলে অবিলব্দা মৎস্যচাষী সমিতির প্রতিনিধি মোঃ টিয়াকে হুমকি দেয়।

পুকুর কিভাবে নিতে হয় আমি দেখব। পুকুর লীজ কমিটি আমাকে হাতে ধরিয়ে দিবে বলে হুংকার দেয়। এসব অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও দেয় ওই শিক্ষক। এমন কি ওই শিক্ষক সামসুজ্জোহা বাবু পুকুর পেতে মরিয়া হয়ে থাকায় র‌্যাব-৫ এর এক সদস্যকে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসের সার্টিফিকেট সহকারী মোঃ মিজানকে ফোন দেয় যাতে বিষয়টি দেখে।

অবিলব্দা মৎস্যচাষী সমিতির প্রতিনিধি মোঃ টিয়া তার হুমকিতে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসের ওফিস সুপার মোঃ ওয়াহেদের নিকট গিয়ে জানতে চাই দ্বিতীয় দরদাতা সূর্যসেনা মৎসজীবি সমিতির আবেদনকারীকে জানতে এবং পুকুর সিডিউলে কার নাম সংযুক্ত আছে তা দেখতে চাই। অফিস সুপার মোঃ ওয়াহেদ আলী কাগজ পত্রাদি দেখালে দেখা যায় যে সূর্যসেনা মৎস্যজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেনে শিক্ষক শামসুজ্জোহা বাবু নিজের ছবি ব্যবহার করেছেন এবং আবেদনকারী হিসেবে আশরাফুল নামে স্বাক্ষর রয়েছে। জালিয়াতির বিষয়টি অফিস সুপার ওয়াহেদ আলী বুঝতে পেরে খবর প্রকাশ করতেও নিষেধ করে।   

এই বিষয়ে শিক্ষক সামসুজ্জোহা বাবুর কাছে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সূর্যসেনা মৎস্যজীবি সমিতিটি কিনে পুকুর টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেছি।

এর আগে গত বছর জেএসসি পরীক্ষার ডিউটির সময় মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ থাকলেও সে এ্যান্ডুয়েড ফোন ও একটি সাধারণ ফোন পরীক্ষা হলে নিয়ে প্রবেশ করে ডিউটি করে। ডিউটি অবস্থায় অন্য একজনকে ডিউটির দায়িত্ব দিয়ে আসছি বলে পরীক্ষার হল থেকে উধাও হয়ে যান । পরীক্ষা শেষ হলেও আর ফিরে আসেনি। সেই সময়ে ওই শিক্ষক পরীক্ষার ডিউটি থেকে বাদও পরে ছিলো। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে কারণ দর্শানো নোটিশও করে ছিলো।

এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শিমুল আকতারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেই শামসুজ্জোহা বাবুই তো উল্টো অভিযোগ করে তার এই কান্ড আমার জানা ছিলো না। বিষয়টি আমি দেখবে বলে মন্তব্য করেন। 

Bootstrap Image Preview