মুহাম্মদ তুহিন ফারাবী।।
ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু পড়েন না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রদের দাবি দাওয়ার জন্যে আন্দোলন সংগ্রামেরও একটি স্থান। যেমন রাজনৈতিক দলের নেতারা রাজপথে নেমে পড়েন দাবি আদায়ে। তাই রাজপথ নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীদের কথা বলার সবচেয়ে উত্তম স্থান। পুর্ব নির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী অাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এর মুজাফফর অাহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ২ ডিসেম্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির ডাক দেয়। সকল রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনা-২০১৮ এর অায়োজন করা হয়েছিল। এই ইশতেহারে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কথা তুলে ধরতে চেয়েছি।
আমরা আগের দিন ঢাবি প্রশাসনকে নিয়ম অনুযায়ী ১১,০০০ টাকার বিনিময়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এর মুজাফফর অাহমেদ চৌধুরী মিলনায়তন ভাড়া করি আমাদের প্রোগ্রামের জন্যে। কিন্তু প্রোগ্রাম করতে গিয়ে তাজ্জব বনে যাই। দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাবি প্রশাসন প্রোগ্রাম করতে দিবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দেয়। এটাকে আপনারা কি বলবেন? শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার বদলে তাদের কণ্ঠকে রোধ করার অপপ্রয়াস দেখালো তারা।
আমি আশ্চার্য হয়ে ভাবতে লাগলাম অামরা কোন দেশে বসবাস করছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কি অধিকার আছে এইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে? স্বাধীন দেশে একটা বৃহৎ ছাত্রসংগঠন শিক্ষার্থীদের অধিকারের কথা বলার সুযোগ পাবে না। এমন দলকানা চিন্তা ভাবনা থেকে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তারা যতদিন বেরিয়ে আসবে না ততদিন আমরা এভাবে অধিকার বঞ্চিত হবো।এবার আসি মূল আলোচনায়। অডিটোরিয়ামে প্রোগ্রাম করতে না পেরে অডিটোরিয়ামের গেইটে প্রোগ্রাম করতে বাধ্য হই আমরা। সেখানেও আমাদের কথা বলতে বারণ করলো শিক্ষকরা। হায়রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান! হায়রে দেশ!
যেভাবেই হোক প্রোগ্রাম শেষে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির ২টি প্রতিনিধিদল রাজনৈতিক দলগুলোর নিকট ছাত্রদের ইশতেহার পৌঁছে দেয়ার জন্য মাঠে নামে। সংগঠনের ২২জন যুগ্ম-অাহ্বায়কসহ ২৩সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক কার্যালয়, ধানমন্ডিতে গিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হাতে তুরে দেই। এখানেও আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হলো। প্রায় ৫ঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো একটি ইশতেহার তুলে দিতে।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির ২য় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে রুহুল কবির রিজভীর হাতে আরেকটি ইশতেহার তুলে দয়ে। এভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দতলগুলোর হাতেও আমাদের ইশতেহার পৌঁছে দেওয়া হয়। অতীব দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির কারণে আমাদের সবাই কেমন যেন সন্দেহের চোখে দেখে। ভালো কাজেও বাঁধা দিতে থাকে।
যে ছাত্র সমাজ দুদিন আগে এত বড় একটি আন্দোলন করেছে সেই ছাত্র সমাজকে নূন্যতম সম্মান দেখাতে শিখেনি বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতারা। এদেরে অনুসারীরাই আমাদের হাঁতুড়িপেটা করেছে। আমরা এদেরই ভোট দিবো দুদিন পর। আমরা এদেরই নেতা মনে করবো আমাদের এই দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে। আজ আমরা এদেরে কাছেই আমাদের নামে মিথ্যে মামলাগুলো তুলে নিতে কতো অনুরোধ করছি। আমরা জানি আমাদের নামে এইসব মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবুও আক্ষেপের সুরে রাষ্ট্র প্রধানদের বলছি ,আমাদের মামলা থেকে মুক্তি দিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দিন। আপনারা চােইলে সবই পারেন। আমাদের বিশ্বাস ৪কোটি তরুণকে আপনাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিবেন।
লেখক: যুগ্ম-অাহ্বায়ক, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
বি.দ্র. এই লেখার সম্পুন্ন দায়ভার লেখকের নিজের।