পাওনা টাকা আদায়ে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার অপেক্ষায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা রাস্তায় কাটালেন চাকরি প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, চাকরির জন্য তারা দারাকে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। কিন্তু তাদের চাকরি দেননি, টাকাও ফেরত দেননি।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পুঠিয়া উপজেলার দুই শতাধিক যুবক রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের ঝলমলিয়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে দারার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় তারা সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন
শুক্রবার এমপি দারা ঢাকা থেকে ফিরছেন এমন খবরে সকাল ১০টার দিকে পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া বাজারে পাওনাদাররা বিক্ষোভ করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে স্থানীয় যুবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন এমপি দারা। কিন্তু তাদের নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হন। নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে এবার দলের মনোনয়ন হারান পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে থাকা এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা। এরপর থেকেই চাকরি প্রত্যাশীরা তাকে হন্নে হয়ে খুঁজছেন।
উপজেলার জিউপাড়া এলাকার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম এলাকার একটি বিদ্যালয়ে চাকরির জন্য এমপির হাতে তুলে দেন ৭ লাখ টাকা। কিন্তু এমপি চাকরি দিতে পারেননি, টাকাও ফিরিয়ে দেননি। এবার তিনি মনোনয়ন না পাওয়া নিয়োগ পাবার আর কোনো সম্ভাবনাই নেই।
পুঠিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, আব্দুল ওয়াদুদ দারা চাকরি দেয়ার নামে স্থানীয় বেকার যুবকদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪-১০ লাখ টাকা করে নেন। টাকা নেয়ার সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এবার এমপি হয়ে সবাইকে চাকরি দেবেন। কিন্তু এবার আর দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তিনি চাকরি প্রত্যাশীদের টাকাও ফিরিয়ে দেননি। নির্বচানের পর টাকা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এমপি দারার এলাকায় ফেরার খবরে পাওনাদারদের পাশাবাশি রাস্তায় নামেন তার বিরোধীরা। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়ালে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
দারার অপেক্ষায় চাকরি প্রার্থীদের রাস্তায় অবস্থান নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য আবুল ফজল প্রামাণিক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে শুক্রবার এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারার এলাকায় আসার খবর প্রচার করেন। তাই চাকরি প্রার্থীরা তাদের টাকা আদায়ে এমপিকে আটকানোর জন্য সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মহিনুল ইসলাম বলেন, টাকা দিয়ে চাকরি পাননি এমন কিছু লোক রাস্তা অবরোধ করেছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। বিকেলে এমপি দারা নিজ এলাকায় ফিরেছেন বলে জানান তিনি।