এইচআইভি রোগাক্রান্ত জিন শুধরানোর পর লুলু এবং নানা নামের দু'জন শিশু জন্ম হয়েছে বলে দাবি করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। চীনের শেনঝেন সাওদার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক জিয়ানকুই হে নামে এক বিজ্ঞানীর এই দাবির কথা প্রথম জানা যায় ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি রিভিউর একটি ভিডিওতে। তখনই বিজ্ঞানীরা নড়েচড়ে বসেন।
বিজ্ঞানী জিয়ানকুই দাবি করেছেন, জিন থেকে এইডস রোগের সমস্ত রকম সম্ভাবনা মুছে দিয়ে সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে সাহায্য করেছেন তারা। যদিও শিশু কন্যা দু'টির ছবিও মেলেনি। তাদের বাবা-মায়ের পরিচয়ও জানা যায়নি।
ভিডিওতে তিনি জানিয়েছেন, সাতজন এইচআইভি আক্রান্ত যুগলের ভ্রূণ নিয়ে চলছে এই গবেষণা। একটি ক্ষেত্রে (সিঙ্গল সেলড এমব্রায়ো) মিলেছে ইতিবাচক ফল। ওই গবেষক বলছেন, ভবিষ্যতে এই শিশু দু'টির ক্ষেত্রে কোনো দিনও এইডস রোগের আশঙ্কা থাকবে না।
এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণাপত্রও প্রকাশ হয়নি এ বিষয় নিয়ে। সে কারণে এই গবেষণা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শুধু ভিডিওতে চীনা বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, বাবা-মায়ের থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভ্রূণ। এর পর আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছে শিশু। সিসিআর৫ জিন সম্পাদনা করেই এই অসাধ্য সাধন করা হয়েছে, এমনটাও দাবি করেছেন বিজ্ঞানী।
২০১৫ সাল থেকে মানব দেহের জিনোম নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। গুয়াংঝোউ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ভ্রূণের জিন থেকে রোগ মুছে ফেলতে সক্ষম তারা।
২০১৬ সালে ক্রিসপার পদ্ধতির কথা জানান লন্ডনের বিজ্ঞানীরাও। এই গবেষণা নিয়ে কাজ করে চলেছে জাপানও। তবে নৈতিক কারণেই বেশকিছু দেশে বাধা পাচ্ছে এই গবেষণা। এ ক্ষেত্রে চীনের বিজ্ঞানীর দাবি, সিসিআর৫ জিন নিয়ে কাজ করেছেন। কারণ, হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে সিসিআর৫ জিনেই।
চীনের বিজ্ঞানীদের ভিডিওটি দেখেই নড়েচড়ে বসেছেন ভারতের বিজ্ঞানীরাও। এর আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে একটি ইঁদুরের কালচার করা কোষে আলঝাইমার রোগের জিন মিউটেশনকে ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু মানবদেহ থেকে রোগের সম্ভাবনা মুছে দেওয়ার মতো যুগান্তকারী আবিষ্কারের কথা কখনোই সামনে আসেনি। এর পর চীনের বিজ্ঞানীদের ভিডিওটি আসায় তা ভাবাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীদেরও।