জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর গ্রামাঞ্চলের গাছিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খেজুর গাছের রস সংগ্রহে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শীতের শুরুতেই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পেশাদার গাছিরা রস সংগ্রহের উপযোগী করে তুলছে খেজুর গাছকে।
কিছুদিন পরেই এসব গাছ থেকে সকাল-বিকাল দুই বেলা রস সংগ্রহ করবেন তারা। সংগ্রহীত রস থেকে গুড় তৈরি করে বিক্রির মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা এসব গাছিদের। তবে গাছ কাটায় পদ্ধতিগত ভুলসহ গাছের পরিচর্যা না থাকায় প্রতি বছর মারা যাচ্ছে শত শত খেজুর গাছ। এমন মন্তব্যও তাদের।
শীতের সকালে তাজা খেজুর রসের সুমিষ্ট স্বাদে জিহ্বা ভেজাতে গাছের তলায় ভীড় জমানোর কথা এখন রূপকথার গল্প বলে মনে হয়। শীত মৌসুমে গ্রামীণ জনপদে খেজুর রসের পিঠা ও পায়েস তৈরির প্রচলন থাকলেও কালের বিবর্তনে তা ক্রমশ বিলুপ্ত হতে বসেছে। কিছু কিছু এলাকায় খেজুর গাছ থাকলেও সংখ্যায় অনেক কম। বছরে একবার তা থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।
খেজুর গাছের সঠিক পরিচর্যা, বিগত বছর গুলোতে ইটভাটার জ্বালানিসহ বিভিন্ন কাজে খেজুর গাছের অবাধ ব্যবহারে এখন বিলুপ্ত প্রায় খেহুর গাছ। ফলে গ্রামবাংলার খেজুর রসের ঐতিহ্য ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। এমন আশঙ্কা কৃষিবিদসহ সাধারণ মানুষের।
গলাচিপার আমখোলা গ্রামের মোতালেব আকন জানান, নিজের জমিতে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো ২৫টি খেজুর গাছ রস সংগ্রের উপযোগী করে তুলেছেন। রস সংগ্রহের জন্য ক্রয় করেছেন মাটির হাড়ি। রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করার জন্য একটি নতুন ছোট তাওয়া ক্রয় করেছেন।
ধারনা করছেন এ থেকে প্রতিদিন ২/৩ কলস রস সংগ্রহ হবে। যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ৪শ' থেকে ৫শ' টাকা আয় হবে। কলাপড়ার ধানখালীর হারুন হাওলাদার জানান, নিজের এবং প্রতিবেশীদেরসহ ১৭টি খেজুর গাছ রস সংগ্রহ করবেন। তবে আগের মত পর্যাপ্ত খেজুর গাছ না থাকায় রসের মূল্য বেশি।
মহিপুর রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার আবুল কালাম জানান, অধিকাংশ খেজুর গাছ গ্রামের রাস্তার পাশে জন্ম হয়। প্রাকৃতিক উপয়ে জন্মানো এ খেজুর গাছের রস খুবই সুস্বাধু। তবে এর কোন পরিসংখ্যান তাদেও কাছে নেই। তবে খেজুর গাছ রোপনের প্রতি লোকজনের তেমন কোন আগ্রহ না থাকায় দিন দিন এর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।