পটুয়াখালীর কলাপাড়ার গৃহবধূ ফাতেমা হত্যার প্রায় এক মাস পেড়িয়ে গেলেও প্রধান আসামি স্বামী মোসলেম সিকদার, সতীনসহ কেউ ধরা পরেনি। বরং পালিয়ে থাকা এসব আসামিরা মামলা প্রত্যাহারে নিহতের বোন কাজলসহ বাবাকে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বাদী কাজল এ ঘটনায় পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে কলাপাড়া থানায় একটি জিডি করেছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, একাধিক মামলার আসামি মোসলেম সিকদার ফাতেমাকে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই পুনরায় বিয়ে করেন। এরপর পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। ঝগড়া ছিল নিত্য ঘটনা। আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ফাতেমাকে হত্যা করে। ২০ অক্টোবর দুপুরে এক সন্তানের মা ফাতেমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে লাশ ঝুলিয়ে রাখে পাষন্ড স্বামী মোসলেম সিকদার। নীলগঞ্জের নাওভাঙ্গা গ্রামের মানুষ এসব জানতে পারলে ফাতেমার ঝুলন্ত মরদেহ নামিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছে এমন প্রচার চালায় মোসলেমসহ নিহত ফাতেমার সতীন ও সতীনের ছেলে। প্রথম দফায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ইউডি মামলা করে।
এদিকে ফাতেমার আট বছর বয়সী শিশু সন্তান ফাহিম এখন মা হারা, নির্বাক হয়ে গেছে। শুধু এদিক-ওদিক ফিরে খুঁজে বেড়ায় মাকে। ফাতেমার বাবা আব্দুর রব সিকদারও অসহায়ের মতো চোখের পানি ঝরাচ্ছেন।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে ফাতেমার বোন কাজল কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ২৩ অক্টোবর একটি মামলা করেন। মামলায় ফাতেমার স্বামী মোসলেম সিকদার, সতীনের ছেলে আবু সায়েক সিকদার, সতীন হাজেরা বেগম, মোসলেমের বোন রওশনারা বেগমসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে এ মামলা প্রত্যাহার করতে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
কাজল জানান, তার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলানো হয়। এ ঘটনা জানার পরে মৃতদেহ হামপাতালে নিয়ে বলা হয় স্ট্রোকে মারা গেছে ফাতেমা। ৫৮ বছর বয়সী মোসলেম সিকদার সম্পর্কে চাচা হয়েও কিশোরী ফাতেমাকে দ্বিতীয় বিয়েতে বাধ্য করে। মোসলেমের কুকীর্তির প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে ফাতেমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে ফাতেমার হত্যার বিচারে মামলা করে মোসলেম সিকদার গংদের অব্যাহত হুমকিতে পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীন হয়ে আছেন।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, ফাতেমার গোটা পরিবারের নিরাপত্তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।