সারা বিশ্বে প্রতি বছর নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ২০১৫ সালের পর থেকে এই সংখ্যাটা প্রতি বছর বাড়ছে। চিকিৎসকেরা মনে করছেন এই মারণ রোগের প্রকোপ যদি আভাবেই বাড়তে থাকে তাহলে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে একজন করে ক্যান্সার রোগী থাকবেন।
তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন কিছু নিয়মিত খাবার প্রতিরোধ করতে ক্যান্সার। আশুন ক্যান্সার প্রতি রোধ করতে সহায়তা করে যে খাবারগুলো
১. কমলা লেবু
শীতকাল তো প্রায় এসেই গেল। তাহলে আর অপেক্ষা কেন! আজ থেকেই কমলা লেবু খাওয়া শুরু করে দিন। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! আসলে বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে প্রতিদিন যদি একটা করে কমলা লেবু খাওয়া যায়, তাহলে ক্যান্সার রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। কারণ এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর ক্যান্সার কোষদের ধ্বংস করে দেয়। ফলে কোনও ধরনের ক্যান্সারেই আর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
২. গ্রিন টি
চিকিৎসকেদের মতে প্রতিদিন ২-৩ কাপ গ্রিন টি পান করা শুরু করলে শরীরে এত মাত্রায় অ্যান্টঅক্সিডেন্টের প্রবেশ ঘটে যে ইসোফেগাল, লাং, ওরাল, লিভার, প্যানক্রিয়াটিক এবং প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এতোটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
৩. টমেটো
একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে বাস্তবিকই টমেটোর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে লাইকোপেন নামক একটি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা আসলে একটি অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান। প্রসঙ্গত, গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত একটা করে কাঁচা টমাটো খাওয়া শুরু করলে প্রস্টেট, এন্ডোমেটরিয়াল, লাং, প্রস্টেট এবং স্টমাক ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
৪.আদা
আমাদের দেশে যে হারে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ৮-৮০ এর নিয়মিত অল্প করে কাঁচা আদা খাওয়া উচিত। কারণ এমনটা করলে ক্যান্সার সেলের প্রকৃতি বদলে গিয়ে তারা নিজেরাই নিজেদের মেরে ফেলে। আর শরীরে যখন ক্যান্সার সেল থাকেই না, তখন ভয় কিসের!
৫. পালং শাক
বাঙালীদের প্রিয় এই সবজিটিকে যদি রোজের ডায়েটে জায়গা করে দেন, তাহলে আর কোনও চিন্তা নেই। কারণ পালং শাকে উপস্থিত ভিটামিন সি, কে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌথ ভাবে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানদের মেরে ফেলে। ফলে এই মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। তাই তো বলি বন্ধু, নিজের এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের আয়ু বৃদ্ধি পাক, এমনটা যদি চান, তাহলে পালং শাক দিয়ে তৈরি নানা পদ খেতে ভুলবেন না যেন!
৬. আপেল
প্রতিদিন আপেল খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আর যদি আপেলের খোসা খাওয়া শুরু করেন, তাহলে তো কথাই নেই! কারণ একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত আপেলের খোসা খেলে শরীরে উপস্থিত ক্যান্সার কোষদের আয়ু কমতে শুরু করে। ফলে প্রস্টেট এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে।
৭. ব্রকলি
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে প্রস্টেট, কোলন এবং ব্লাডার ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতে ব্রকলির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই সবজিটির অন্দরে উপস্থিত ‘সালফোরাফেন’ নামক উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ক্যান্সার সেল সৃষ্টিকারি বিশেষ কিছু রাসায়নিক শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে এই মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও আশঙ্কা আর থাকে না।