নবাবগঞ্জের বান্দুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুদ রানাসহ (৩৫) ৩ জনকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আহতরা হলেন, নুরুল ইসলাম শাকিল (৩৫) ও তার ছোট ভাই রকি (২৬)।
রবিবার (১৮ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে বান্দুরা ইউনিয়নের হাসনাবাদ এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা উপজেলা হাসনাবাদ এলাকার মৃত করম আলীর ছেলে। নুরুল ইসলাম শাকিল ও রকি একই এলাকার শেখ রহিমের ছেলে।
এ ব্যাপারে আহত নূরুল ইসলাম জানান, রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আমি তখন ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার চাচাত ভাই কামাল হঠাৎ আমার ঘরের সামনে এসে চিৎকার দিয়ে আমাকে ডাকতে থাকে এবং বলে জিয়া মেম্বার ও তার ভাইয়েরা মিলে আমাকে দৌড়ানি দিছে। এ কথা শুনে আমি আমার ছোট ভাই রকির কথা জানতে চাইলাম। কামাল বললো সে জানে না।
আমি ওর ফোনে বারবার চেষ্টা করার পরেও ওকে না পেয়ে টর্চ লাইট নিয়ে রকিকে খোঁজার জন্য বের হলাম। জিয়াদের বাসা আমাদের বাড়ির কাছাকাছি। তাই যাতে করে ওদের সঙ্গে আর দেখা না হয় সে জন্য আমি অন্য রাস্তা দিয়ে যাই। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরেই জিয়া, ইখতিয়ার, নাহিদ, ইমরান, অপুসহ ১০/১২ জনের হাতে কিরিজ, রামদা, জুতি, চাপাতি দেখতে পাই। যাতে করে কোনো ঝামেলা না হয় সে জন্য আমি ওদের সাথে কোনো কথা না বলে বাড়ির পথে হাটতে শুরু করলেই পিছন থেকে ওদের কাছে থাকা জুতি আমার দিকে ছুড়ে দেয়। জুতি আমার ডান হাতে গিয়ে বিধে যায়।
আমি তখন চিৎকার দিলে আমার ভাই রকি এসে আমাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে আমার ভাইকেও এলোপাতারী কোপায়। আমাদের ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে চলে যায়। পরে এলাকাবাসী আমাকে ও আমার ভাইকে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে আমাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাত কি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের ২টি ছাগল চুরি হয়। এ ঘটনা কয়েকজনকে সন্দেহ করে থানা পুলিশ ও এলাকার নেতাদের জানাই এবং তারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করি। এর জের ধরেই রবিবার রাতে এ ঘটনা ঘটানো হয়।
এ ব্যাপারে আহত বান্দুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বলেন, আমি তখন ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বাইরে হট্টগোলের শব্দ পাই। পরে আমি বেরিয়ে শুনি আমার দুই ভাতিজাকে জিয়া ও তার ভাইয়েরা মিলে কুপিয়েছে এবং তাদেরকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি ঘটনা সম্পর্কে জিয়া ও তার ভাইদের কাছে জানতে চাইলে তারা আমার কোনো কথার জবাব না দিয়ে আমার ডান হাতে রামদা দিয়ে কোপ দেয়। পাশে পুকুর থাকায় কুপ দেওয়ার কারণে আমার হাতে থাকা মোবাইল পুকুরে পড়ে যায়। আমি মোবাইল তুলতে পুকুরে ঝাপ দিলে জিয়ার ভাইয়েরাও পুকুরে ঝাপ দেয় এবং আমাকে এলোপাতারী কোপায়। আমার ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার আমার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হামলাকারী জিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল তথ্য মিথ্যা। আমি কাউকে মারিনি। আমি রাজনৈতিক মামলার কারণে এমনিতেই বাড়িতে থাকতে পারি না। তবে আমার ভাইদের সাথে রাতে মারামারি হয়েছে ঘটনা সত্য।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। শিখগিরি আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।