চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় খিরা চাষের উপযোগী আবহাওয়া থাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে চাষীদের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটেছে। প্রতিমণ খিরা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। যা উৎপাদন খরচের চেয়ে তিন গুণ বেশি। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় প্রতিবছরই খিরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন নতুন নতুন কৃষক।
এদিকে মীরসরাই উপজেলায় এ বছর প্রায় ৮০-৯০ হেক্টর জমিতে খিরা চাষাবাদ করা হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়।
উপজেলার মাঠে মাঠে কৃষকরা এখন খিরার জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত। পরিবারে ছোট থেকে বড় সবাই অবিরাম খিরার জমিতে নিড়ানি, সার কীটনাশক ছিটানো আর পানি দেয়া নিয়ে মহাব্যস্ত। উপজেলার হিঙ্গুলী, ইছাখালী, সাহেরখালী, খৈয়াছড়া, মঘাদিয়া ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ খিরার চাষাবাদ করা হয়েছে। সবুজ ডগার খিরা গাছে ভরে গেছে কৃষকের ক্ষেত। ইতোমধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে আগাম জাতের কিছু খিরা উঠতে শুরু করেছে। দামও আকাশছোঁয়া।
উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে চাষীদের নিয়ে আসা খিরা ক্রয় করে ব্যাপারীরা ট্রাকযোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন। আগাম শীতকালীন ফসল হিসেবে খিরা চাষাবাদ করে কয়েক হাজার কৃষক এখন সচ্ছল স্বাবলম্বী।
সরেজমিন উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নে খিরার মাঠে গিয়ে কথা হলো মধ্যম আজমনগর গ্রামের খিরা চাষী আনিস সওদাগর জানান, অন্য ফসলের চেয়ে খিরা চাষে অধিক লাভ হওয়ায় এ চাষাবাদের প্রতি তার ঝোঁক। একবিঘা জমিতে খিরার চাষ করতে তার ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাজারজাত করতে শ্রমিক খরচ আরও ৮ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে ২০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। তবে ক্ষুদ্র বর্গাচাষিরা প্রতিবিঘা জমি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে আবাদ করায় তাদের খরচ আরও বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যে ২০ দিনে তিনি প্রায় ৫৫ হাজার টাকার খিরা বিক্রি করেছেন। ক্ষেত থেকে তোলা যাবে আরও প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকার খিরা।
অন্যদিকে একই গ্রামের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফেনী নদীর কোল ঘেঁষে আমাদের এই আজমনগর খিরা চাষ করে এলাকার সাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু এই ফেনী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে বিলিন হচ্ছেন শতশত পরিবারসহ ফসলী জমি। তিনি দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন।