Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিডরে নিখোঁজ শহিদুল ১১ বছর পর বাড়িতে ফিরলেন!

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১১:১১ PM
আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১১:১১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


১১ বছর আগে সিডরে নিখোঁজ হওয়া জেলে শহিদুল মোল্লা (বর্তমান বয়স ৪৮) ফিরে এসেছেন । সরকারিভাবে নিখোঁজের তালিকায়ও তার নাম রয়েছে। পরিবারও তার বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছে বহু আগেই। কিন্ত হঠাৎ গত ১২ নভেম্বর বিকেলে বাগেরহাটের শরণখোলার আমড়াগাছিয়া বাজারে পাগলবেশে ঘুরতে দেখে তাকে সনাক্ত করে পরিবারের লোকেরা। দীর্ঘ ১১ বছর পর হারানো স্বজনকে পেয়ে ওই পরিবারে এখন আবেগ-আনন্দের বন্যা বইছে।

উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের ফুলমিয়া মোল্লার ছেলে শহিদুল তার ছোট ভগ্নিপতি পান্না ফরাজীর নৌকায় পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের ছাপড়াখালী এলাকায় মাছ ধরতে গিয়েছিল। ওই নৌকায় ছিল মাসুম, ছিদ্দিক, সেলিমসহ আরো তিন জেলে। ২০০৭ সালের ১৫নভেম্বর সিডরের আঘাতে তারা সবাই ভেসে যায়। তার বাবা ফুলমিয়া ছিলেন অন্য মৎস্য ব্যবসায়ী ইউনুচ শিকদারের নৌকায়। তারও কোনো খোঁজ মেলেনি আজও।

ফিরে আসা মানসিক ভারসাম্যহীন শহিদুলের সিডরের কথা স্মরণে নেই। এখন যা বলছে, একটু পর সেকথা আর মনে করতে পারছে না। সিডরে কোথায় ছিল, কি ঘটেছিল তাও বলতে পারছে না। তবুও তার অসংলগ্ন কথায় যা জানা গেল, ভারতের পাটগ্রাম নামক এলাকায় রশিদ খানের বাড়িতে থাকত। সেখানে গরু রাখা আর বাড়ির কাজবাজ করত। সঠিক করে বলতে পারছে শুধু নিজের নামটাই।

পরিবারের লোকজনের জানান, একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে চার সন্তান নিয়ে দুর্বিসহ অবস্থায় পড়েন স্ত্রী মাসুমা বেগম। তিনি চার সন্তানের কথা ভেবে চার বছর আগে কাজের সন্ধানে চলে যান ভারতের বেঙ্গালোরে। অভাবের সংসারে অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গেছে মেয়ে পুতুল (২০) ও মুকুলের (১৮)। মাসুম (১৭) হাফেজি পড়ছে। ছোট ছেলে মাসুদ (১১) সিডরের সময় তিন মাসের গর্ভে ছিলো তার। স্বামী ফিরে আসার খবর মোবাইলে শুনে খুশিতে আত্মহারা মাসুমা বেগম দু-একদিনের মধ্যেই ফিরে আসবেন বেঙ্গালোর থেকে।

শহিদুলের বড় বোন মঞ্জু বেগম জানান, তিনি ১২ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে জানতে পান আমড়াগাছিয়া বাজারে বেশ কিছুদিন ধরে শহিদুল নামের এক পাগল ঘোরাফেরা করছে। তখন তিনি ছুঁটে যান সেখানে। গিয়ে দেখেন বাসস্ট্যান্ড যাত্রী ছাউনিতে ঘুমিয়ে আছে শহিদুল। তার কাপলের বামপাশে কাটা দাগ, হাতের আঙ্গুলে বড়সি ঢুকে ক্ষত হয়েছিল, এসবের মিল দেখেই সনাক্ত করেন ভাইকে। সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে এনে তার পাগলবেশে থাকা লম্বা চুল, দাঁড়ি কেটে সিডরে হারিয়ে যাওয়া শহিদুলকে আবিষ্কার করেন।

বর্তমানে শহিদুল মানসিক ভারসাম্যহীন। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করানো পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। তিনি তার ভাইয়ের চিকিৎসায় সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন।

Bootstrap Image Preview